চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ ছয়টি উপকূলীয় এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে সকল প্রকার মাছ শিকারে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা কার্যক্রম। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই কার্যক্রম। তবে নিষেধাজ্ঞার এই সময় নৌকা ও জালের মেরামত কাজ সারতে অনেক জেলেই নিয়েছেন প্রস্তুতি। যদিও অভিযানকালীন সময়ে জেলেরা পাবেন খাদ্য সহায়তার চাল। তবে সরকারি এই খাদ্য সহায়তা অপ্রতুল বলে দাবি জেলেদের। অপরদিকে অভয়াশ্রম বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
জেলা মৎস্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকার প্রতিবছর ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইতোমধ্যে পদ্মা-মেঘনা উপকূলীয় জেলে পাড়াগুলোতে জেলেদের অংশগ্রহণে সচেতনতা সভা করা হয়েছে। এরপরও আইন অমান্য করে যেসব জেলে নদীতে মাছ আহরণ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন টাস্কফোর্সে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এদিকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধের কারণে জেলার প্রায় ৪৩ হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়বে। এ কারণে এসব জেলেদের কিস্তির টাকা পরিশোধে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকা নিবন্ধিত জেলেদের ফেব্রুয়ারি থেকে মে ৪ মাস খাদ্য সহায়তা হিসেবে প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে চাল দিচ্ছে সরকার। তবে শুধু চাল দিয়ে সংসার চালানো কষ্টের বলে দাবি জেলেদের। তাই খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তারও দাবি তাদের।
সদর উপজেলার আনন্দ বাজার এলাকায় জেলে কামাল হোসেন ও হৃদয় বলেন, আমরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়, তাতে আমাদের সংসার চলে না। এছাড়াও আমরা ঋণের কারণে বেকায়দায় আছি। তাই সরকারি খাদ্য সহযোগিতার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তাও আমাগো দরকার।
Advertisement
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, নিষেধাজ্ঞার দুই মাস জেলেদের ঋণের কিস্তি বন্ধ রাখার জন্য সকল এনজিও সংস্থাকে আমরা চিঠি দিবো। এছাড়াও জেলেদের মাঝে খাদ্য হিসেবে চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আশা করছি এবার আমরা সুফল পাবো।
জেলা নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, আগামী দুই মাস জাটকা রক্ষায় অভয়াশ্রম বাস্তবায়নে নৌ পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকবে। দিনে-রাতে ছয়টি করে ১২টি পুলিশের টহল দল কাজ করবে। এছাড়াও আমরা হাইমচর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ পুলিশ ফাঁড়ি করে টহল আরও জোরদার করবো। শরীফুল ইসলাম/এনআইবি/জিকেএস