চিত্র শিল্পে অনবদ্য ভূমিকা, বিশেষ করে চিত্রাঙ্কনে শিশুদের আগ্রহ তৈরি ও তাদের সৃজনশীল মনোবিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার-২০২৩ পেয়েছেন বাংলাদেশের বরেণ্য চিত্রশিল্পী বিশিষ্ট শিশু চিত্রাঙ্কন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক।
Advertisement
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কলকাতায় রথীন্দ্র মঞ্চে ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী আয়োজিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী শ্রীমতি রেখা গোস্বামী এই অ্যাওয়ার্ড তার হাতে তুলে দেন।
অ্যাওয়ার্ড অর্জনের প্রতিক্রিয়ায় শিল্পী অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক উদ্যোগটির প্রশংসা করে একে দুই বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির অটুট সেতুবন্ধন উল্লেখ করে আয়োজক ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সোসাইটি ও এশিয়ান বিজনেস পার্টনারশিপ সামিটকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, দিনশেষে রং পেনসিল হাতে শিশুদের আর্ট শেখানোর মাধ্যমেই প্রকৃত সৃষ্টির আনন্দ খুঁজে পাই আমি। এই স্বীকৃতি তার মেধা ও কাজকে আরো শানিত তথা ত্বরান্বিত করবে বলেও তিনি মনে করেন।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিশু চিত্রাঙ্কন বিশেষজ্ঞ। বরেণ্য এই শিল্পী ১৯৭৫ থেকে প্রায় অর্ধশতক ধরে বাংলাদেশের কোমলমতি শিশুদের সৃজনশীল ও মানবিক নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। শিশুদের মানবিক ও সৃজনশীলতা বিকাশের লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা কেন্দ্র 'সেন্টার ফর চাইন্ড ক্রিয়েটিভিটি, আজিমপুর লেডিস ক্লাব চিত্রাঙ্কন বিভাগ, “বাংলাদেশ শিশু একাডেমি'র চিত্রাঙ্কন বিভাগ, প্রভাতি আর্ট স্কুল, ‘শান্ত-মারিয়াম একাডেমি এবং 'মোস্তাফিজ একাডেমি অব ফাইন আর্টস’ (মাফা)।
Advertisement
শিশুদের আর্ট শেখানোসহ দেশ-বিদেশে বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন তার শখ ও নেশা। করোনার মহা দুর্যোগেও ভার্চুয়াল চিত্র প্রদর্শনী করে প্রশংসিত হন তিনি। দেশে এবং বিদেশে অসংখ্য কর্মশালা ও সেমিনারে অংশগ্রহণসহ একক ও যৌথ বিভিন্ন আর্ট এক্সিবিশনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ২০১০ সালে 'রেট্রোসপেকটিভ' শিরোনামে তার একটি একক চিত্রকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছিলেন ভারতীয় প্রখ্যাত অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা। তিনি অসংখ্য দেশি ও বিদেশি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার আঁকা ছবি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাপানের জুও-মাচি আর্ট মিউজিয়াম এবং অনেক শিল্পানুরাগীদের সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত আছে।
তৎকালীন ঢাকা আর্ট কলেজ (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) থেকে বিএফএ ও এমএফএ সম্পন্ন করেন এই শিল্পী। ৯০-এর দশকে জাপান সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (মনবুশো) বৃত্তি নিয়ে সেখানে চার বছর লেখাপড়া শেষে ফিরে এসে ১৯৯৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
জেএইচ/জিকেএস
Advertisement