আন্তর্জাতিক

দক্ষিণ কোরিয়া-জাপানে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্নে

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্নে নেমে গেছে। দেশটির সরকার বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এই তথ্য জানিয়েছে। জন্মহার বাড়ানোর নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও দেশটিতে জন্মহার রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে।

Advertisement

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি পরিসংখ্যানের প্রাথমিক তথ্যে বলা হয়েছে, দেশটির জন্মহার ২০২৩ সালে ০ দশমিক ৭২ শতাংশে নেমে এসেছে। যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় আট শতাংশ কম। অথচ বর্তমানের পাঁচ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যা বজায় রাখতে ২ দশমিক ১ শতাংশ শিশু জন্মের প্রয়োজন।

বর্তমান এই প্রজনন হার অব্যাহত থাকলে দক্ষিণ কোরিয়ায় ২১০০ সাল নাগাদ জনসংখ্যা কমে দুই কোটি ৬৮ লাখে দাঁড়াবে। ২০২৩ সালে দেশটিতে দুই লাখ ৩০ হাজার নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা ১৯ হাজার ২০০ কম। দক্ষিণ কোরিয়া সরকার শিশু জন্মদানে উৎসাহিত করতে হাজার হাজার কোটি ডলার খরচ করছে। তবুও ২০২৩ সালে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ১৯৭০ সালের পর সবচেয়ে কম।

আরও পড়ুন:

Advertisement

জন্মহার বাড়াতে বিদেশি গৃহকর্মী নিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া সন্তান নিলেই কর্মীকে ৮২ লাখ টাকা দেবে কোরিয়ান কোম্পানি! নারীরা সন্তান নিচ্ছেন না, কাঁদলেন কিম জং উন রুশ নারীদের কমপক্ষে ৮টি করে সন্তান নিতে বললেন পুতিন

এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তান না নেওয়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সন্তান লালন-পালনের উচ্চ খরচ, সম্পত্তির মূল্যবৃদ্ধিসহ ব্যাপক প্রতিযোগিতামূলক একটি সমাজে একটি ভালো বেতনের চাকরির অনিশ্চয়তা।

এদিকে, প্রায় একই ধরনের সমস্যার মধ্যে রয়েছে আরেকটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ জাপান। টানা আট বছর ধরে দেশটিতে শিশু জন্মহার আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। তার মধ্যে গত বছরে জাপানের জন্মহার সবচেয়ে বেশি কমেছে। এমনকি, দেশটিতে বিয়ের হারও কমে গেছে।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাপান সরকারের প্রকাশিত প্রাথমিক উপাত্ত থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে দেশটির শিশু জন্মহার রেকর্ড ৫ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। ২০২৩ সালে দেশটিতে ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬৩১ শিশুর জন্ম নেয়। অন্যদিকে, দেশটিতে ২০২৩ সালে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ২৮১টি বিয়ে হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ কম।

আরও পড়ুন:

Advertisement

জন্মহার বাড়াতে অভিভাবকদের আর্থিক প্রণোদনা বাড়ালো জাপান দেশের জনসংখ্যা বাড়াতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান কিশিদার টোকিও ছাড়লে নাগরিকদের টাকা দেবে জাপান সরকার

দেশটির সরকার বলছে, ৯০ বছরের মধ্যে জাপানে এবারই প্রথম বাৎসরিক বিয়ের সংখ্যা ৫ লাখের নিচে নেমে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির জনসংখ্যা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ জাপানে বিবাহবহির্ভূত সন্তান জন্মদানের ঘটনা খুবই বিরল।

এর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছিলেন, ক্রমহ্রাসমান জন্মহার মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি এবং এখনই তার উপযুক্ত সময়। এখনই ব্যবস্থা না নিলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।

জন্মহার বাড়াতে জনগণকে নানা প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে জাপান সরকার। বেশি সন্তান নিলে নগদ অর্থসহ নানা সুবিধা দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে তারা। কিন্তু দেশটিতে সন্তান লালন-পালন খুবই ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকেই সন্তান নিতে চান না।

সূত্র: ফ্রান্স২৪

এসএএইচ