অমর একুশে বইমেলার ২৮তম দিনে প্রকাশিত হলো নাট্যকার সুখন সরকারের ‘সুরৎ জামাল ও অধুয়া সুন্দরী’। মৈমনসিংহ গীতিকা থেকে নাট্যরূপ দিয়েছেন তিনি। বইটি বইমেলায় আগামী প্রকাশনীর ২৩ নাম্বার প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাচ্ছে। উত্তরা হাউজ থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। শেষদিকে মেলায় এলেও বেশ আকর্ষণ তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন প্রকাশক শিবলী। তবে একুশে বইমেলায় গ্রন্থাকারে ‘সুরৎ জামাল ও অধুয়া সুন্দরী’ই তার প্রথম প্রকাশ।
Advertisement
সুখন সরকার বলেন, ‘এখানে ভাষার বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে কেবল সহজীকরণ করা হয়েছে সমঝদারের ভাবনা থেকে। তাছাড়া যেসব বক্তব্য দীর্ঘায়িত তা সংক্ষেপকরণ, নাটকের গতি যেন তুলনামূলক ঠিক থাকে; সেজন্য মূল বিষয়ের সঙ্গে অন্যান্য ঘটনার পুনঃসমন্বয় করা হয়েছে।’
কাহিনি সম্পর্কে নাট্যকার বলেন, ‘বানিয়াচং মুলুকের দেওয়ান আলাল খাঁ, স্ত্রী ফাতেমা বিবি দম্পতি। বিবি ফাতেমা সুন্দর ফুটফুটে পুত্রসন্তান জন্ম দেয়। তার নাম রাখা হয় সুরৎ জামাল। বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে প্রথমে হাবেলিতে, পরে দুবরাজের আশ্রয়ে পুত্র জামাল বড় হতে থাকে। সেখানে দুরবাজ কন্যা অধুয়াও বড় হতে থাকে।’
আরও পড়ুন• বইমেলায় রাশেদ মেহেদীর ‘ফেসবুকে দেখি চাঁদ’• ঋজু রেজওয়ানের ‘জ্যামন নাচমিতি এবং জলপ্রহর’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘ষোড়শী কন্যা এক সময় জামালে মুগ্ধ হয়। জামালের রূপ, গুণে ঘোরগ্রস্ত অধুয়া সুন্দরীর মোহে আবিষ্ট হয়। উভয়েই পরস্পরের প্রেমে আবদ্ধ হয়েও নিজেদের ভুল এবং নানা চক্রান্তে জামালের মৃত্যু শেষ পর্যন্ত পরিণতিকে বিষাদগ্রস্ত করে তোলে। এমনই বিয়োগাত্মক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ঘটনা প্রবাহ তথা নাট্য কাহিনির ইতি ঘটে।’
সুখন সরকার আরও বলেন, ‘এক সময়ে তাবৎ পৃথিবীর শিল্প-সংস্কৃতির গবেষক, চর্চক, বিদগ্ধজন বাংলা, বাঙালি জাতিকে জানতেন এই ‘পূর্ববঙ্গ-গীতিকা’ বা ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র কল্যাণে। সেই গীতিকা বা পালাগান কিংবা নাট্যাঙ্গিক বাঙালি নাট্যচর্চাকারীদের চর্চার মধ্যে থাকা প্রয়োজন জাতিগত অস্তিত্ববোধ থেকেই।’ বাঙালির মাঝে সংস্কৃতির এ আঙ্গিকের চর্চা থাকুক, এমন প্রত্যাশায় নব নাট্যরূপ দান তার প্রচেষ্টা বলে জানিয়েছেন সুখন সরকার।
সুখন সরকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনে কর্মশালা, নাট্য নির্দেশনা ও অভিনয় করে থাকেন। মুকাভিনয়ম’র সব প্রযোজনার পাণ্ডুলিপি তিনি রচনা করে থাকেন। তার সম্পদনায় ‘মুক্তি চেতনা’ নামে ছোট কাগজ প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে গবেষণা পত্রিকা ‘সংস্কৃতায়ন’ সম্পাদনা করে যাচ্ছেন।
এমআই/এইউ/এমএস
Advertisement