জাতীয়

কোকেনের গন্তব্য ইউরোপ-আমেরিকা, ‘নিরাপদ’ রুট বাংলাদেশ

বাংলাদেশে এখনো সেভাবে বিস্তার ঘটাতে পারেনি লাতিন আমেরিকার মাদক কোকেন। কিন্তু মাঝে মধ্যেই ধরা পড়ছে বড় চালান। অধিকাংশ চালান দেশে ঢুকছে আফ্রিকান নাগরিকদের মাধ্যমে। গত ১০ বছরে ধরা পড়া সব বড় চালানই বাংলাদেশ হয়ে যাচ্ছিল অন্য দেশে। আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী চক্র কয়েকটি দেশ ঘুরে বাংলাদেশ হয়ে এসব মাদক পাচার করছে ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে। দেশের বিমানবন্দরের ‘দুর্বলতা’পাচারের জন্য নিরাপদ মনে করছে পাচারকারীরা।

Advertisement

গত ২৪ জানুয়ারি রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৮ কেজি ৩শ গ্রামের সলিড কোকেনের চালান জব্দ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এ ঘটনায় মালাউই, ক্যামেরুন, নাইজেরিয়া ও বাংলাদেশের আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ কোকেনের আনুমানিক বাজারমূল্য একশ কোটি টাকার ওপরে। দেশের ইতিহাসে সলিড কোকেনের এটিই সবচেয়ে বড় চালান।

ডিএনসির পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে বাংলাদেশে প্রায় ৪১ কেজি কোকেন ধরা পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩ কেজি কোকেন ধরা পড়েছে ২০২৩ সালে। গত ২৬ জানুয়ারি এক চালানেই ধরা পড়েছে সাড়ে ৮ কেজি।

২০২২ সালে দেশে কোকেন ধরা পড়ে ৪ দশমিক ৫৭ কেজি। ২০২১ সালে ১ দশমিক ৫৫ কেজি। ২০২০ সালে ৩ দশমিক ৮৯৩ কেজি ও ২০১৯ সালে ধরা পড়ে ১ কেজি কোকেন।

Advertisement

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে কোকেনের ব্যবহারকারী নেই। মালাউইতে কোকেন উৎপাদন হয় না। তাদের ধারণা, গত ২৪ জানুয়ারি ৮ কেজি ৩০০ গ্রামের যে কোকেন এসেছিল দেশে তা অন্য কোনো দেশে পাচারের চেষ্টা ছিল। এর আগে বাংলাদেশে কোকেনের যে চালান ধরা পড়েছিল তার প্রায় সবই এসেছিল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে, গন্তব্য ছিল ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা।

কোকেন বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর ও ব্যয়বহুল মাদক। লাতিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোকেন পাচার হয়। কোকেনের চোরাকারবারিরা সারা বিশ্বে অনেক সুসংগঠিত। তাই কোকেনের চালান দেশে প্রবেশ করা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জন্য অনেকটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। তারা এ বিষয়ে একটা সার্বিক তদন্তে নেমেছে।

ইউএনওডিসির গ্লোবাল কোকেন রিপোর্ট যা বলছেজাতিসংঘের অপরাধ ও মাদক বিষয় কার্যালয়ের (ইউএনওডিসি) ‘গ্লোবাল কোকেন রিপোর্ট- ২০২৩’ বলছে, মূল উৎপাদনকারী দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আফ্রিকা হয়ে ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে কোকেন ঢুকছে। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ব্রাজিল থেকে দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার মোজাম্বিকে আকাশপথে কোকেন পাচারের সময় ধরা পড়ে ১০টি চালান। এর মধ্যে দুটি ধরা পড়েছিল মোজাম্বিকের মাপুতু বিমানবন্দরে, বাকিগুলো ব্রাজিলে (মূলত সাও পাওলো বিমানবন্দরে)। এর মধ্যে নয়টি চালানে ২০ কেজির কম কোকেন ছিল। ২০১৯ সালে সাও পাওলো ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে কার্গো বিমান থেকে উদ্ধার করা হয় ১১০ কেজি। মোজাম্বিকের পাশের দেশ হচ্ছে মালাউই।

আরও পড়ুন• ১০০ কোটি টাকার কোকেন পাচারের ট্রানজিট ছিল বাংলাদেশসাগরে মিললো ৩২০০ কেজি কোকেনকোকেন উদ্ধার করলো এপিবিএনর ডগ স্কোয়াড, আফ্রিকান নাগরিক গ্রেফতার

Advertisement

ইউএনওডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মাদকের বাজারে কোভিড মহামারির কারণে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে মাদক পাচারকারীদের তাদের অবৈধ পণ্য বাজারজাত করাও কঠিন হয়। ভাইরাস ছড়ানো রোধে কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার কারণে নাইট ক্লাব ও বারগুলোও বন্ধ থাকায় কোকেনের মতো মাদকের চাহিদা কমে যায়।

সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতার ওপর কোভিডকালীন মন্দা সামান্যই প্রভাব ফেলেছে। কোকেনের নাটকীয় উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ২০২০ সালে বিশ্বে রেকর্ড পরিমাণ দুই হাজার টন উৎপাদিত হয়।

২০২০ সালে বিশ্বে মোট কোকেনের ৬১ শতাংশ কলম্বিয়া, ২৬ শতাংশ পেরু ও বলিভিয়া এবং সংলগ্ন এলাকায় ১৩ শতাংশ উৎপাদিত হয়। ইউএনওডিসির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে কোকেন ব্যবহারকারীদের ২৪ শতাংশ মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের, ৩০ শতাংশ উত্তর আমেরিকার (যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, গ্রিনল্যান্ড, বারমুডা এবং সেন্ট পিয়েরে অ্যান্ড মিকুইলান), ২১ শতাংশ মধ্য ও পশ্চিম ইউরোপের।

এর বাইরে আফ্রিকায় ৯ শতাংশ, দক্ষিণ এশিয়ায় ৫ শতাংশ, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৪ শতাংশ, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে ৩ শতাংশ, ওশেনিয়ায় ৩ শতাংশ এবং পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ায় এক শতাংশ ব্যবহারকারী রয়েছে।

ওই সময়ে পৃথিবীব্যাপী জব্দ হওয়া কোকেনের ৭২ শতাংশই ধরা পড়ে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে। এর বাইরে উত্তর আমেরিকায় ১২ শতাংশ, পশ্চিম ও মধ্য ইউরাপে ১৫ শতাংশ এবং পৃথিবীর বাকি অংশে এক শতাংশ কোকেন ধরা পড়ে।

গার্মেন্টস ব্যবসার কথা বলে কোকেন আনেন বিদেশিরানাইজেরিয়ার নাগরিক ডন ফ্রাঙ্কি ওরফে জ্যাকব ফ্রাঙ্কি। তিনি বাংলাদেশ নাইজেরিয়ান কমিউনিটির প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশিল্পের বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসার আড়ালে তিনি দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের রুট নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করা ফ্রাঙ্কি গত ৯ মাস আগে বাংলাদেশ ছেড়ে নিজ দেশে পাড়ি জমান। গত ২৪ জানুয়ারি জব্দ হওয়া ৮ কেজি ৩শ গ্রাম কোকেন চোরাচালান চক্রের সদস্যদের কাছে ‘বিগ বস’ নামে পরিচিত। তাকে গ্রেফতার না করা গেলেও তার সহযোগী সাইফুল ইসলাম রনি (৩৪), মো. আসাদুজ্জামান আপেল (২৭), ক্যামেরুনের নাগরিক কেলভিন ইয়েং, নাইজেরিয়ার নাগরিক ননসো ইজিমা পেটার ওরফে অস্কার (৩০) ও নুডেল ইবুকা স্টানলি ওরফে পডস্কিকে (৩১) গ্রেফতার করে ডিএনসি।

দেশে কোকেনের সব ঘটনায় বিদেশি জড়িতকোকেন জব্দের পাঁচটি ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিটি ঘটনায়ই বিদেশি নাগরিক জড়িত এবং তারা গ্রেফতার হয়েছেন। এসব কোকেনের চালান দক্ষিণ আমেরিকা থেকে একাধিক দেশ ঘুরে বাংলাদেশে এসেছে। ২০১৩ সালের ১১ জুন কারওয়ান বাজারের একটি অভিজাত হোটেল থেকে তিন কেজি কোকেনসহ গ্রেফতার হন পেরুর নাগরিক হুয়ান পাবলো রাফায়েল জাগাজিটা।

ওই অভিযানের নেতৃত্বে থাকা ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের বর্তমান অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটোয়ারী জাগো নিউজকে বলেন, ‘পেরুর নাগরিক চার দেশ ঘুরে বাংলাদেশে এসে ধরা পড়েন। তবে এই চালানের গন্তব্য কোন দেশ, সেটি বের করা যায়নি। পেরুর নাগরিকের দায়িত্ব ছিল চালানটি বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়া। সেই মামলায় হুয়ান পাবলো এখনো কারাগারে। মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি।’

আমরা কোকেনের একাধিক চালান জব্দ করেছি। তবে সবগুলো চালানই ছিল রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহারের। এসব চালান পাচারে জড়িত ছিল বাংলাদেশি ও বিদেশিরা। তাদেরও আমরা আইনের আওতায় এনেছি। কোকেন পাচারের সঙ্গে জড়িত আরও কিছু নাম আমরা পেয়েছি সেগুলো নিয়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দেশে এখনো কোকেনের বাজার সৃষ্টি হয়নি। আমরা সচেষ্ট রয়েছি, কোকেনসহ যে কোনো মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের কার্যক্রম চলমান।- ডিএনসির ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান

জার্মানির গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ২০২২ সালে নাইজেরিয়ায় কেবল একটি গুদাম থেকে ১ দশমিক ৮ টন কোকেন উদ্ধার করা হয়। ২০২৩ সালের এপ্রিলে আইভরিকোস্টে দুই টনের বেশি এবং কেপ ভার্দেতে সাড়ে ৯ টন কোকেন উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনা থেকে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে মাদক পাচারের পথ হিসেবে আফ্রিকাকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে ধারণা।

ট্রানজিট রুট যে কারণে চিন্তার বিষয়আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, বিশ্বের অন্যতম প্রধান দুটি মাদক উৎপাদন ও চোরাচালানের রুট হলো গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল ও গোল্ডেন ক্রিসেন্ট। এ দুটি রুটের মাঝে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। ফলে বিশ্বের নানান দেশ থেকে বিভিন্ন রকমের ভয়ংকর মাদক পাচার হয় বাংলাদেশের ওপর দিয়ে। এরই মধ্যে দেশে আসা এসব কোকেনের চালানও এই রুটের অংশ হিসেবে ট্রানজিট ব্যবহার করে অন্য দেশে যাচ্ছিল। তবে চোরাকারবারিরা যে শুধু ট্রানজিট রুট ব্যবহার করছে তা নয়, বাংলাদেশের ভেতরেও কোকেনসহ নানান রকম মাদকের বাজার তৈরির চেষ্টা করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, কোকেনের ট্রানজিট রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহারের একটি চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে তা সফল হচ্ছে না। তবে সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে কোকেনের রুট হিসেবে শুধু নয়, দেশি ও আন্তর্জাতিক একটি চক্র চেষ্টা করছে বাংলাদেশে কোকেনের বাজার সৃষ্টি করতে। তারা যদি এতে সফল হয় তাহলে দেশের জন্য মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি হবে; সঙ্গে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীদের পাকাপোক্ত রুট হিসেবে হতে পারে।

‘আন্তর্জাতিক ও দেশীয় যারা মাদকের বড় সিন্ডিকেট তারা কাট-আউট ভিত্তিতে মাদক কারবারি করে। প্রতিটি দেশের মাদকের বিষয়ে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। এমনকি কোন দেশে মাদক প্রবেশের ঝুঁকি কতটুকু সেসব বিশ্লেষণও তাদের কাছে রয়েছে। কোনো দেশের বিমানবন্দরে স্ক্যানিংয়ে দুর্বলতা থাকলে এসব আন্তর্জাতিক মাদক কারবারিরা সেই দেশের বিমানবন্দর দিয়ে মাদক পাচারের চেষ্টা চালায়।’

তিনি বলেন, ‘অনেক দেশ আছে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য মেডিসিনের জন্য সামান্য পরিমাণ বৈধতা দেয়। রুট হিসেবে পাচারের জন্য তারা মূলত ওই দেশের গ্যাপ অ্যানালাইসিস করে। এরপর তারা দেখে কোন দেশের কোন পার্টটুকু তারা ব্যবহার করতে পারে সেই অনুযায়ী তারা মাদক পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার করে। এসব মাদক কারবারি হয়তো বাংলাদেশের বিমানবন্দরের দুর্বলতা কাজে লাগাতে পারে।’

ডিএনসির ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা কোকেনের একাধিক চালান জব্দ করেছি। তবে সবগুলো চালানই ছিল রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহারের। এসব চালান পাচারে জড়িত ছিল বাংলাদেশি ও বিদেশিরা। তাদেরও আমরা আইনের আওতায় এনেছি। কোকেন পাচারের সঙ্গে জড়িত আরও কিছু নাম আমরা পেয়েছি সেগুলো নিয়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দেশে এখনো কোকেনের বাজার সৃষ্টি হয়নি। আমরা সচেষ্ট রয়েছি, কোকেনসহ যে কোনো মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের কার্যক্রম চলমান।

ডিএনসির পরিচালক (অপারেশন) তানভীর মমতাজ বলেন, ‘কোকেনের চালানের সঙ্গে দেশি ও বিদেশি চক্র জড়িত। এরই মধ্যে বেশকিছু চক্র চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি চক্রগুলোও চিহ্নিত করার কাজ চলমান। গত মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৮ কেজি ৩শ গ্রামের সলিড কোকেনের চালান জব্দ করা হয়। সেই কোকেনের চালানটি বাংলাদেশের জন্য ছিল না। কারণ বাংলাদেশে এত পরিমাণ কোকেন কনজিউম করার মার্কেট নেই।’

টিটি/এএসএ/জেআইএম