আইন-আদালত

হাইকোর্টে খালাস থেকে যাবজ্জীবন, দিতে হবে শিশুর ভরণপোষণ

হবিগঞ্জে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে দেওয়া খালাসের রায় বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৩ ধারা অনুসারে ধর্ষণের পর জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণপোষণের ব্যয়ভার বহনের নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

বিচারিক আদালতের রায় বাতিল চেয়ে বাদীর (ভিকটিম) করা আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শরীফুজ্জামান মজুমদার। আবেদনকারী ভিকটিমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আক্তারুজ্জামান।

রাষ্ট্রপক্ষ এজাহার থেকে জানায়, বিয়ের কথা বলে ভিকটিমকে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের টিলাগাঁও এলাকার ছিদ্দিক আলীর ছেলে কাছুম আলী ধর্ষণ করেন। ২০০৫ সালের ৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের একটি হাসপাতালে পরীক্ষা করান তিনি। পরীক্ষায় গর্ভে সন্তান থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন। গর্ভধারণের পর কাছুম আলী তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। এরপর ২০০৬ সালের ২১ জুলাই কাছেম আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। এর মধ্যে ভিকটিম একটি সন্তানের জন্ম দেন।

Advertisement

ওই মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ আসামিকে খালাস দেন। এ রায় বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ভিকটিম। ওই আবেদনের পর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। মঙ্গলবার সেই রুল মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।

একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আসামিপক্ষ স্থানীয়ভাবে আপসের কথা বলে। এরপর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ না হওয়ার কথা বলে হবিগঞ্জে নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল-২ আসামিকে খালাস দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে ভিকটিম হাইকোর্টে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৬১ এ ধারায় আবেদন করেন।

হাইকোর্ট ২০২১ সালের ৩০ মে রুল জারি করেন এবং নিম্ন আদালতের নথি তলব করেন। হাইকোর্ট রুল শুনানি শেষে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল এবং আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। আর ভিকটিমের সন্তানের লালনপালন করার বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১৩ ধারা মোতাবেক নির্দেশনা দিয়েছেন।

এফএইচ/বিএ/এমএস

Advertisement