ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের বিষয়টি অনেকটা উপেক্ষিত থেকে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন অধ্যায় নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। কিন্তু মহান ভাষা আন্দোলনে তার অবদানের ভূমিকা নিয়ে কম গবেষণা হয়েছে।’
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ‘সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে বিশেষ করে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন, রাজনৈতিক দর্শন ও বঙ্গবন্ধুর পরিচালিত বিভিন্ন গণআন্দোলন সম্পর্কে অনেক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু কোনো এক অদ্ভুত কারণে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের বিষয়টি অনেকটাই উপেক্ষিত থেকে গেছে। অথচ তরুণ শেখ মুজিবের বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার যে যাত্রা তার শুরুটা হয়েছিল এই ভাষা আন্দোলন দিয়েই।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রিয় মাতৃভাষার প্রতি বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম মমত্ববোধ এবং মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষাসহ সর্বস্তরে মাতৃভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধুর আপসহীন মনোভাবের পরিচয় আমি আবিষ্কার করেছি তিনটি আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে। প্রথমত, ১৯৪৭ থেকে ’৫২ সাল পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন পর্বে বঙ্গবন্ধুর সক্রিয় ভূমিকা ও গতিশীল নেতৃত্ব পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। দ্বিতিয়টি, পাকিস্তানের সংবিধানের রচনার জন্য গঠিত গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার জন্য তার আপসহীন অবস্থানের মাধ্যমে। তৃতীয়টি হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠাসহ সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনে তার পরিশ্রমের কারণে।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন থেকে ভাষা আন্দোলন ও বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর অবদান যদি আলাদা করে ফুটিয়ে তোলা না হয় তাহলে এ ভাষার মাসে আমরা ভাষা শহীদদের স্মরণ করে যে আয়োজন করছি তা কিছুটা হলেও অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা। এতে আরও বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য মো. জিল্লুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. এনায়েতুর রহিম প্রমুখ।
এফএইচ/কেএসআর/এএসএম
Advertisement