১৯ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি, এক মাসেরও বেশি সময় কেটে গেলো। বিপিএলে এখনও পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হলো মোট ৪২টি ম্যাচ। সবগুলোই গ্রুপ পর্বের খেলা। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে ৭টি দলের প্রত্যেকে দু’বার করে একে-অপরের মুখোমুখি হলো। ঢাকায় তিন রাউন্ড, সিলেট এবং চট্টগ্রামে এক রাউন্ড করে মোট ৫ রাউন্ডে শেষ হলো বিপিএলের গ্রুপ পর্বের খেলা।
Advertisement
শুক্রবার দুপুরের ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে শেষ দল হিসেবে বিপিএলের প্লে-অফ নিশ্চিত করে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল। যদিও পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান তৃতীয়। এই ম্যাচে বরিশালের জয়ের মধ্য দিয়ে খুলনার বিদায় নিশ্চিত হয়।
ভগ্ন হৃদয় নিয়ে বিকেলের ম্যাচে সিলেটের মুখোমুখি হয়েও হেরেছে খুলনা। প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১২৮ রান সংগ্রহ করে তারা। ২ ওভার এবং ৬ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। হতাশাজনকভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও জয় দিয়ে শেষ করে সিলেটের দলটি। অন্যদিকে টানা চারম্যাচ জিতে শুরু করলেও পরাজয় দিয়ে বিপিএল শেষ করে খুলনা।
বিপিএলের প্রথম পর্ব শেষে হিসাব-নিকাশের পালা। বিদেশি পারফরমারদের ভিড়ে দেশি ক্রিকেটাররা কে কেমন করলো? সামনেই যেহেতু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, সে হিসেবে দেশি ক্রিকেটারদের পারফম্যান্স খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যারা বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকার সম্ভাব্য দাবিদার, তাদের কার কী অবস্থা?
Advertisement
বিপিএলে বিদেশি ক্রিকেটারদের উপস্থিতি ছিল এবার ভিন্নরকমের। আসা-যাওয়ার মধ্যে। যারা পারফরমার, তাদের কেউ শুরু থেকে অংশ নিয়ে মাঝ পথে চলে গেছেন, কেউ আবার মাঝ পথে এসে খেলছেন এখনও, কেউ কেউ এসে কয়েকম্যাচ খেলে চলে গেছেন।
সে হিসেবে দেশি ক্রিকেটাররা বেশ ভালো সুযোগ পেয়েছে পরিসংখ্যান টেবিলে নিজেদের অবস্থান উপরের দিকে তুলে ধরতে। ব্যাটারদের মধ্যে আশার বিষয় হলো, দুই তরুণ তাওহিদ হৃদয় এবং তানজিদ হাসান তামিম- দু’জনই নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছেন। আসরের তিন সেঞ্চুরিয়ানের মধ্যে তারা দু’জন।
যদিও শেষ দিকে এসে ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ে রান সংগ্রাহকের তালিকায় এখন শীর্ষে অবস্থান করছেন তামিম ইকবাল। ফরচুন বরিশাল অধিনায়কের মোট রান ১২ ম্যাচে ৩২.৫৮ গড়ে ৩৯১। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন দুটি। সর্বোচ্চ রান ৭১। যদিও আন্তর্জাতিক টি-২০ থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন তিনি।
সর্বোচ্চ রান
Advertisement
খেলোয়াড়
ম্যাচ
অপরাজিত
রান
সর্বোচ্চ
গড়
স্ট্রা. রেট
১০০
৫০
তামিম ইকবাল (বরিশাল)
১২
-
৩৯১
৭১
৩২.৫৮
১২৬.১২
-
২
তাওহিদ হৃদয় (কুমিল্লা)
১২
২
৩৮৩
১০৮*
৩৮.৩
১৪৯.৬
১
১
তানজিদ তামিম (চট্টগ্রাম)
১১
-
৩৮২
১১৬
৩৪.৭২
১৩৬.৪২
১
২
অ্যালেক্স রস (ঢাকা)
১১
২
৩৫২
৮৯*
৩৯.১১
১৩৪.৮৬
-
৪
মুশফিকুর রহিম (বরিশাল)
১২
১
৩১৪
৬৮*
২৮.৫৪
১২৩.৬২
-
৩
মোহাম্মদ নাঈম (ঢাকা)
১২
-
৩১০
৬৪
২৫.৮৩
১১৯.৬৯
-
২
এনামুল হক বিজয় (খুলনা)
১২
৩
২৯৬
৬৭*
৩২.৮৮
১২০.৮১
-
৩
লিটন দাস (কুমিল্লা)
১২
-
২৯২
৮৫
২৪.৩৩
১২৬.৯৫
-
২
আফিফ হোসেন (খুলনা)
১২
২
২৭৮
৫২
২৭.৮
১২০.৮৬
-
১
টম ব্রুস (চট্টগ্রাম)
৮
৩
২৬১
৫১*
৫২.২
১২৬.৬৯
-
২
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের টপ অর্ডার তাওহিদ হৃদয় একটি সেঞ্চুরি করেছেন। আরেকটি সেঞ্চুরির কাছাকাছি (৯১*) ইনিংস খেলেছেন। তাতে ১২ ম্যাচে ১২ ইনিংস শেষে ৩৮.৩ গড়ে তার রান ৩৮৩। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ১১৬ রানের অনবদ্য একটি ইনিংস খেলেছেন। ১১ ম্যাচে ৩৪.৭২ গড়ে রান করেছেন ৩৮২টি।
চতুর্থ স্থানে রয়েছেন দুর্দান্ত ঢাকার অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার অ্যালেক্স রস। ১১ ম্যাচে ৩৯.১১ গড়ে তিনি রান করেছেন ৩৫২। পঞ্চম স্থানে রয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ফরচুন বরিশালের এই ব্যাটারের ১২ ম্যাচে ৩১৪। হাফ সেঞ্চুরি ৩টি। তিনিও আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলেন না।
বোলারদের তালিকায় শীর্ষে শরিফুল
বোলারদের তালিকায় সবার শীর্ষে সবার আগে বিদায় নেয়া দুর্দান্ত ঢাকার পেসার শরিফুল ইসলাম। ১২ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ২২টি। ১৫.৮৬ গড়, ৭.৮১ ছিল ইকনোমি রেট। ১৭ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রংপুর রাইডার্সের সাকিব আল হাসান। ১৫.৫২ গড় এবং ইকনোমি রেট ৬.২৩ করে।
১৫ উইকেট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন শেখ মেহেদী হাসান। ১৬.৯৩ গড় এবং ৬.৯৯ ইকনোমি রেট। বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে ১৪ উইকেট নিয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিলাল খান রয়েছেন চার নম্বর স্থানে। হাসান মাহমুদ নিয়েছেন ১৩ উইকেট।
সর্বোচ্চ উইকেট
খেলোয়াড়
ম্যাচ
ওভার
মেডেন
রান
উইকেট
গড়
ইক. রেট
৪
৫
শরিফুল ইসলাম (ঢাকা)
১২
৪৪.৪
-
৩৪৯
২২
১৫.৮৬
৭.৮১
১
-
সাকিব আল হাসান (রংপুর)
১১
৪২.২
১
২৬৪
১৭
১৫.৫২
৬.২৩
-
-
মেহেদী হাসান (রংপুর)
১২
৩৬.২
১
২৫৪
১৫
১৬.৯৩
৬.৯৯
-
-
বিলাল খান (চট্টগ্রাম)
১২
৪৫.২
-
৩৬১
১৪
২৫.৭৮
৭.৯৬
-
-
হাসান মাহমুদ (রংপুর)
১২
৩৮.০
-
৩২২
১৩
২৪.৭৬
৮.৪৭
-
-
তাসকিন আহমেদ (ঢাকা)
১২
৪৪.০
-
৩৬৬
১৩
২৮.১৫
৮.৩১
-
-
তানভির ইসলাম (কুমিল্লা)
১১
২৯.১
১
২১৭
১২
১৮.০৮
৭.৪৪
১
-
মোস্তাফিজুর রহমান (কুমিল্লা)
৯
২৭.৩
-
২৬৩
১১
২৩.৯
৯.৫৬
-
-
তানজিম সাকিব (সিলেট)
৯
৩১.০
-
২৯৫
১১
২৬.৮১
৯.৫১
-
-
শহিদুল ইসলাম (চট্টগ্রাম)
১১
৩৮.০
১
৩২৭
১১
২৯.৭২
৮.৬০
-
-
আইএইচএস/