ফিচার

আদিবাসীদের বর্ষবরণ

আজ ১২ এপ্রিল। ১৪২২ বঙ্গাব্দ শেষ হতে আর একদিন বাকি। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় শুরু হয়েছে বিজু বা বৈসাবি উৎসব। বাংলা বছরের শেষ দু’দিন ও নববর্ষের প্রথম দিন এ উৎসব পালিত হয়।

Advertisement

খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান- এই তিন পাহাড়ি জেলায় প্রধান তিনটি ক্ষুদ্রজাতিসত্তা রয়েছে। এদের প্রত্যেকেরই বছরের নতুন দিনে উৎসব রয়েছে। বিজু পাহাড়ি আদিবাসীদের প্রধান উৎসব। ‘তুরু তুরু তুরু রু—বাজি বাজাত্তে/পাড়ায় পাড়ায় বেরেবং বেক্কুন মিলিনে/এচ্যে বিজু, বিজু, বিজু...’ (তুরু তুরু শব্দে বাঁশি বাজে, গ্রামে ঘুরে বেড়াব সবাই মিলে, আজ বিজু, আজ বিজু।) এ গানের তালে তালে বিজু পালন করা হয়। প্রতিটি সম্প্রদায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উৎসব পালন করে। তবে বিজু উৎসব সবাই একই সময়ে পালন করে। বিজু প্রতিটি সম্প্রদায়ের কাছে আলাদা নামে পরিচিত। চাকমারা বলে বিজু, মারমারা বলে সাংগ্রাই, ত্রিপুরারা বলে বৈসুক। শহরাঞ্চলে যা ‘বৈসাবি’ নামে পরিচিত। ত্রিপুরাদের বৈসুক থেকে ‘বৈ’, মারমাদের সাংগ্রাই থেকে ‘সা’, আর চাকমাদের বিজু থেকে ‘বি’, একত্রে ‘বৈ-সা-বি’ নামে পরিচিতি পেয়েছে শহর জীবনে।

আদিবাসীদের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উৎসবের যেমন ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে, তেমনি উৎসবের তিনটি দিনের নামও আলাদা। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন উৎসবের প্রথম দিনকে হারি বৈসুক, দ্বিতীয় দিনকে বিসুমা ও তৃতীয় দিনকে বিসিকাতাল বলে। মারমারা প্রথম দিনকে সাংগ্রাই আকনিয়াহ, দ্বিতীয় দিনকে সাংগ্রাই আক্রাইনিহ ও শেষ দিনকে লাছাইংতার বলে। চাকমাদের কাছে এগুলো ফুল বিজু, মূল বিজু ও গোজ্যেপোজ্যে দিন হিসেবে পরিচিত।উৎসবের দ্বিতীয় দিনে থাকে প্রতিটি ঘরে নানা মুখরোচক খাবার। বিশেষভাবে বলা যায় ঐতিহ্যবাহী ‘পাজন’ এর কথা। এ খাবার কমপক্ষে ২০ ধরনের শাকসবজি দিয়ে তৈরি করা হয়। তৃতীয় দিনে দল বেঁধে মন্দিরে গিয়ে নতুন বছরের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এ ছাড়া চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাদের আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান তো থাকবেই। মন ছুঁয়ে যাওয়ার অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম চাকমাদের বিজু নৃত্য, ত্রিপুরাদের গরাইয়া নৃত্য ও মারমাদের জলকেলি ইত্যাদি।এসইউ/এমএস

Advertisement