ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে মালদ্বীপের জলসীমায় প্রবেশ করেছে চীনের ‘নজরদারি’ জাহাজ। শিগগিরই ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’ নামের ওই জাহাজটি নোঙর করবে মালে বন্দরে। যদিও সেটিকে ‘সমুদ্র গবেষণা’ জাহাজ বলে দাবি করছে চীন সরকার।
Advertisement
গত দুই মাস ধরে ভারত-মালদ্বীপ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। এই আবহে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে চীনা জাহাজের গতিবিধি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর।
গত মাসে মালদ্বীপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, চীনের জাহাজটি গবেষণার জন্য আসছে না, বন্দর থেকে রসদ নিয়ে সেটি ফিরে যাবে। কিন্তু প্রথম থেকেই এই জাহাজটির উপর সজাগ দৃষ্টি রাখছে ভারতীয় নৌবাহিনী। চীন ভারত মহাসাগরে গবেষণার নামে ‘গুপ্তচর’ মোতায়েন করছে বলে আগেও অভিযোগ করেছে ভারত।
আরও পড়ুন:
Advertisement
আশঙ্কা করা হচ্ছে, জাহাজটি শুধুমাত্র মালদ্বীপের জলসীমায় থাকবে না। সেটি শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মধ্যেও ঘোরাফেরা করবে। ভারত মহাসাগরে চীনা সাবমেরিন বা ডুবোাজাহাজগুলোর গতিবিধি আরও বাড়বে- এমনটাই আশঙ্কা নয়া দিল্লির। এই চীনা ‘নজরদারি’ জাহাজের গতিবিধি নিয়েই চিন্তিত ভারত।
বলে রাখা ভালো, ভারত মহাসাগরের পূর্ব অঞ্চল বরাবর মালাক্কা প্রণালীতে গবেষণা চালানোর নামে কার্যকলাপ বাড়িয়ে তুলেছে চীনের জাহাজ, যা রীতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের কাছে। বেজিং চরবৃত্তি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ নয়া দিল্লির। যে কারণে শ্রীলঙ্কার কাছে ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’ নামের জাহাজটির নোঙরে আপত্তি জানিয়েছিল ভারত। পরে পড়শি দেশের অনুরোধ মেনে সেটিকে হাম্বানটোটা বন্দরে ভিড়তে দেয়নি কলম্বো। কিন্তু চীনের দাবি অনুযায়ী ‘গবেষণা’ জাহাজটিকে নোঙরের অনুমতি দেয় মালদ্বীপ, যা মোটেই ভালো চোখে দেখছে না ভারত।
গত জানুয়ারি মাসের শুরুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লাক্ষদ্বীপ সফরের পরেই মালদ্বীপ-ভারত সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। মোদীকে নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেন ‘চীনপন্থী’ প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর দলের একাধিক নেতা। সেই দ্বন্দ্ব চলাকালেই চীন সফরে যান মুইজ্জু। কূটনৈতিক টানাপড়েনের এই আবহে চীনা গুপ্তচর জাহাজের মালদ্বীপে আগমন ফাটল চওড়া পারে দুই দেশের সম্পর্কে।
আরও পড়ুন:
Advertisement
ভারত মহাসাগরে ‘জিয়ান ইয়াং হং ০৩’ জাহাজের উপস্থিতি বেশ কয়েকবার লক্ষ্য করা গেছে। ২০২১ সালে এটি ইন্দোনেশিয়ার সুন্দা প্রণালি অতিক্রম করেছিল। এ ঘটনায় দেশটির কর্তৃপক্ষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। তখন কর্তৃপক্ষ বলেছিল, ওই সময় তারা তিন দফায় নিজেদের শনাক্তকরণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়।
গবেষণায় নিয়োজিত চীনের নৌযানগুলো শ্রীলঙ্কা উপকূলের কাছাকাছিও থেমেছে। ২০২২ সালে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ শনাক্তকরণে সক্ষম ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’ নামের একটি চীনা সামরিক নৌযান কলম্বোর কাছে ভিড়লে ভারতে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে চীনের একটি গবেষণা নৌযান শ্রীলঙ্কা উপকূলে নোঙর করে। তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ