নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে খতনার সময় শিশুর গোপনাঙ্গ কাটার দায়ে অভিযুক্ত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা বিজয় কুমার দেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। একইসঙ্গে চিকিৎসা সহকারী সৌরভ ভৌমিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বদলি ও নিষিদ্ধের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, শিশুর খতনা করার সময় দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. যোবায়েরকে প্রধান করে দুই সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খতনা করার সময় আল নাহিয়ান তানভীর (৮) নামের এক শিশুর গোপনাঙ্গের অগ্রভাগ কেটে ফেলার অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ‘খতনার সময় শিশুর পুরুষাঙ্গ কাটার অভিযোগ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাগো নিউজ।
Advertisement
ভুক্তভোগী শিশু আল নাহিয়ান তানভীর উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আলমগীরের ছেলে।
আরও পড়ুন: খৎনার সময় শিশুর পুরুষাঙ্গ কাটার অভিযোগ
শিশুটির পরিবারের লোকজন জানান, বুধবার বেলা ১১টার দিকে শিশু তানভীরকে খতনা করাতে তার পরিবারের লোকজন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তখন সেখানে মেডিকেল অফিসার উপস্থিত ছিলেন না। খতনা করানোর সময় উপসহকারী মেডিকেল অফিসার বিজয় কুমার দে এবং চিকিৎসা সহকারী সৌরভ ভৌমিক ভুল করে শিশুটির গোপনাঙ্গের অগ্রভাগ কেটে ফেলেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে শিশুটির স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম ও উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আবু নাছেরসহ জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা অন্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ভুক্তভোগী শিশু তানভীরের বাবা আলমগীর বলেন, “আমার সন্তানকে খতনা করাতে নিয়ে গেলে ‘চিকিৎসক আসছেন’ বলে বিজয় ও সৌরভ নিজেরাই খতনা করান। এতে আমার ছেলের গোপনাঙ্গের অগ্রভাগ কেটে যায়। অতিরিক্ত রক্তপাতে আমরা ভয় পেয়ে যাই। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা পালিয়ে যান। বর্তমানে চিকিৎসকরা শঙ্কামুক্ত বললেও আমি সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। আমি জড়িতদের শাস্তি চাই।”
Advertisement
শিশুটির চাচা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ ফরিদ ফরহাদ জাগো নিউজকে বলেন, জরুরি বিভাগের দায়িত্বহীনতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমরা অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করছি।
এদিকে ঘটনাটি জানার পর বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন ও সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশু আল নাহিয়ান তানভীরকে জেলার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/জেআইএম