বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মার্চে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম আবারও বাড়াবে সরকার। গণবিরোধী সরকার জবাবদিহির ধার-ধারে না। ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করায় প্রতিশোধ নিতেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানো হচ্ছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দলটির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, জনজীবন দুর্বিষহ করে তুলতেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত হবে অতিনিষ্ঠুর। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি হলে এর চেইন রি-অ্যাকশনে জনসাধারণের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। কৃষি, শিল্প, কলকারখানা গভীর সংকটে পড়বে। এমনিতেই বাজারে দ্রব্যমূল্য হু-হু করে বাড়ছে। মানুষ তার প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। এরওপর এই দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের ওপর চরম আঘাত আনবে। মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষ এমনিতেই কঠিন কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছে। দেশে ৮০ শতাংশ মানুষের আয় বাড়েনি। অনাহারে-অর্ধাহারে কোনোরকম জীবন কাটাচ্ছে। তার ওপর বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি জনগণকে বিপদের মুখে ঠেলে দেবে। সামনে রমজান মাস, তার আগেই এই দাম বৃদ্ধি হবে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো’।
তিনি বলেন, উন্নয়নের নামে দেশ-বিদেশ থেকে ব্যাপকহারে ঋণ নিয়ে জনগণের ওপর বোঝা বাড়ানো হয়েছে। সরকারের হরিলুটের আর্থিক নীতির কারণে দেশের রাজকোষ প্রায় শূন্য হয়ে পড়েছে। এখন ডলার সংকটের কারণে কয়লা উৎপাদনের খরচ বাড়ার কথা বলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। জনগণের প্রশ্ন, ডলারের রির্জাভ গেলো কোথায়? উন্নয়নের ফানুস দেখিয়ে ডলার কারা আত্মসাৎ করেছে, কারা বিদেশে সম্পদ পাচার করেছে? বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দাম বৃদ্ধির উদ্যোগকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
Advertisement
রিজভী বলেন, আত্মনির্ভরশীলতার স্থলে পরনির্ভরশীলতাকে করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় নীতি। এখন ভারত থেকে কচুরমুখীও আমদানি করতে হয়। প্রকাশনা শিল্পকে ধ্বংস করে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক পর্যন্ত এখন ছাপা হয় ভারত থেকে। নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতির বদলে ব্যাপকভাবে ভিনদেশি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে গল্প, কবিতা ও কার্টুনের বইয়ের পাশাপাশি সিনেমা ও নাটক আমদানি করা হচ্ছে। এই সরকার বাংলাদেশের বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাব্যবস্থায় জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে অগ্রাহ্য করে পাঠ্যপুস্তকে ভিনদেশি চেতনা ঢোকানো হয়েছে। বাংলাদেশের কবি সাহিত্যিকদের দেশাত্মকবোধমূলক যেসব গল্প, কবিতা এবং বরেণ্য জাতীয় নেতৃবৃন্দদের জীবনী রয়েছে তা পাঠ্যপুস্তক থেকে ক্রমান্বয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে। ইংরেজি ও হিন্দির মিশ্রনে বিকৃত বাংলা ভাষার চর্চার ফলে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মৌলিক ভাষা ও সাংস্কৃতিক চেতনা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভুইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম,তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।
কেএইচ/এসআইটি/এএসএম
Advertisement