দীর্ঘ জীবন কে না পেতে চায়। তবে বিশ্বের গুটি কয়েক সৌভাগ্যবান মানুষই পান দীর্ঘ আয়ু। সাধারণত মানুষের গড় আয়ু ৬০-৭০ বছর। তেমনি বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক একজন নারী ছিলেন জিন ক্যালমেন্ট। তিনি ১২২ বছর ১৬৪ দিন বয়সে ১৯৯৭ সালের ৪ আগস্ট মারা যান।
Advertisement
তবে তিনি তার এই বর্ণাঢ্য জীবনের গল্প অন্যদের বলেছেন। জিনের জন্ম ১৮৭৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সের আর্লেসে। যা আইফেল টাওয়ার তৈরির ১৪ বছর আগে। ১৮৯৬ সালে তার চাচাতো ভাই ফার্নান্ডের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। ফার্নান্ড ছিলেন একজন ধনী ব্যবসায়ী। ফলে জিন আর্লেসের উচ্চ সমাজের মধ্যে জীবনযাপন করতেন।
বড় বাড়িতে থাকতেন জিন। ঘরের কোনো কাজ করতে হতো না জিনকে। তিনি তার সময় কাটাতেন বেড়ানো, শিকার, পর্বতারোহন, সাঁতার, টেনিস, রোলার স্কেটিং, সাইক্লিং এবং গানের সঙ্গে। এই রুটিন তিনি ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত করেছেন।
আরও পড়ুন• রেকর্ড গড়তে সাড়ে ৩ ঘণ্টা বরফের মধ্যে কাটান তিনি
Advertisement
১৮৯৮ সালে ২২ বছর বয়সে তার একমাত্র সন্তান ইভন মেরি নিকোল ক্যালমেন্টের জন্ম দেন। ১৯৪২ সালে ৭৩ বছর বয়সে স্বামী ফার্নান্ড মারা যান। তখন জিনের বয়স ৬৭। জিন ক্যালমেন্ট সম্ভবত কখনই অনুমান করতে পারেননি যে তিনি আরও সাড়ে পাঁচ দশক বেঁচে থাকবেন।
জিন তার এই দীর্ঘ জীবনের জন্য দায়ী করেন তার খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা, রুটিনমাফিক জীবনযাপনকে। তিনি অলিভ অয়েল সমৃদ্ধ খাবার খেতেন এবং এই তেল তিনি ত্বকেও ব্যবহার করতেন। এছাড়া তার খাবারের তালিকায় ছিল ডার্ক চকলেট, হোয়াইন, ডেজার্ট।
১১০ বছর বয়সে একটি নার্সিং হোমে চলে যান জিন। সেখানে তার রুটিন ছিল খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, নাস্তা করা, আর্মচেয়ারে দুই ঘণ্টা ঘুমানো, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, গান শোনা এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া। জিনের দাবি ছিল, তিনি কখনো বড় ধরনের অসুখে পড়েননি। ১১১ বছর বয়সে প্রথম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন হার্টের সমস্যার কারণে।
জিন ১৯৮৮ সালে ১১২ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত হন। তার দুই বছর পর ১১৪ বছর বয়সে তিনি ভিনসেন্ট ভ্যান গগ সম্পর্কে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। যার নাম ভিনসেন্ট এট মোই। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অভিনেত্রী হয়ে ওঠেন।
Advertisement
আরও পড়ুন• রেকর্ড গড়তে সাড়ে ৩ ঘণ্টা বরফের মধ্যে কাটান তিনি • নাক দিয়ে গানের সুর বাজিয়ে বিশ্বরেকর্ড নারীর
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড অব রেকর্ড
কেএসকে/জিকেএস