এবারের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে প্রতিশ্রুতিশীল কথাসাহিত্যিক কাঞ্চন রানী দত্তের দুটি শিশুতোষ গল্পের বই। এর মধ্যে ‘ভূতের ডাক্তার’ প্রকাশ করেছে বইপুস্তক প্রকাশন। গল্পটা এরকম- এক হাসপাতালে গভীর রাতে শুধু ভূতদের চিকিৎসা করেন এক আজব ডাক্তার। তবে সবদিন সব ভূতের চিকিৎসা তিনি করেন না। শনিবারে হয় হরিণ ভূতের চিকিৎসা। রবিবার বিড়াল ভূত। সোমবার অতিথি পাখিভূত। মঙ্গলবার অফডে। বুধবার ডাকাত ভূত। বৃহস্পতিবার গৃহকর্মী ভূত আর শুক্রবারে বাঘ ভূতদের চিকিৎসা করা হয়। সেই ডাক্তারের কাছে ভূতরা আসে নানা সমস্যা নিয়ে...। সম্পূর্ণ রঙিন এ বইটির দুর্দান্ত প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেছেন প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট মেহেদী হক। দাম রাখা হয়েছে ১৫০ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৫৭১ নম্বর স্টলে।
Advertisement
অন্যদিকে ‘দৈত্য ও পরীর বিয়ে’ প্রকাশ করেছে খুশবু প্রকাশন। এ বইয়ের গল্পটাও কম মজার নয়। জলপরী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে এক শিংওয়ালা দৈত্যকেই বিয়ে করবে। এই খবরে পরীদের সমাজে সমালোচনার ঢেউ। সবাই জলপরীকে ছিঃ ছিঃ করছে। পরীদের রানী আকাশপরী বললাে- তুমি পরী। তুমি সুন্দরী, তুমি কেন একটা দৈত্যকে বিয়ে করবে? জবাবে জলপরী বললো- আমি এতিম। আমার সবকথা দৈত্যকে বলেছি। সে আমার জন্য জীবন দেবে, সব বিপদে পাশে থাকবে বলে কথা দিয়েছে। তাছাড়া আমি ওকে ভালবাসি। এরপর নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বিয়ে হলো দুজনের। হারানো শিংটাও খুঁজে পেল বর দৈত্য। সম্পূর্ণ রঙিন এ বইটির চমৎকার প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেছেন নাইমুর রহমান মাহির। দাম ১৫০ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৭৩০ নম্বর স্টলে।
এ দুটি বই প্রসঙ্গে লেখক কাঞ্চন রানী দত্ত বলেন, শিশুতোষ গল্প লেখার ক্ষেত্রে আমি তাদের আনন্দ দেয়ার পাশাপাশি দিকনির্দেশনামূলক কিছু ম্যাসেজও দেয়ার চেষ্টা করি। সর্বোপরি আমার চেষ্টা থাকে তাদের কল্পনার রাজ্যকে বিস্তৃত করা।
প্রসঙ্গত, দুই দশক ধরে লেখালেখিতে যুক্ত কাঞ্চন রানী দত্ত। ২০০৪ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় লিখেছেন নারী অধিকারবিষয়ক অসংখ্য ফিচার ও নিবন্ধ। এরপর কিছু দিন বিরতি নিয়ে মনোনিবেশ করেন মৌলিক লেখালেখিতে। ২০২১ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘বিন্দু বিসর্গের দ্বন্দ্ব’। বইটি পাঠকমহলে বেশ সাড়া ফেলায় আরো উৎসাহিত হন তিনি। যার ফলশ্রুতিতে ২০২২ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘শিশির নন্দিনী’ ছাড়াও আরো তিনটি শিশুতোষ গল্পের বই। সেগুলো হলো- ‘পাপন ও মারিয়ো’, ‘তেলাপোকার শুঁড়ে ইঁদুরের লেজ’ ও ‘জলময়ূরের ছবি’। যে বইগুলোতে মজার গল্পের ছলে দারুণভাবে শিশুদের মনোজগতের নানা দিক উন্মোচন করেছেন তিনি। গত বইমেলায়ও প্রকাশিত হয়েছিল তার দুটি শিশুতোষ গল্পের বই- ‘ঘোড়ার পিঠে হাতি’ ও ‘ময়নার বায়না’। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে ছোটগল্পের বই ‘মেঘসীমানার শূন্যরেখায়’। ‘প্রিয়দর্শিনীর অপ্রিয় কথন’ ও ‘অনুভূতির অশেষ পথচলা’ তার আলোচিত দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ।
Advertisement
এইচআর/জেআইএম