নওগাঁয় চলছে সপ্তাহব্যাপী অমর একুশে বইমেলা। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মেলার শেষদিনে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
Advertisement
বিশেষ করে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটির দিন হওয়ায় অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ে মেলায় এসেছেন। তাই শিশু-কিশোরদের পদচারণায় মুখর মেলা প্রাঙ্গণ।
স্থানীয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁ এ বইমেলার আয়োজন করেছে।
এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ কৃষ্ণধন (কেডি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলায় ৩০টি স্টলসহ খাবার এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মিলিয়ে প্রায় ৮০টি দোকান বসেছে।
Advertisement
মেলায় একুশে পরিষদের আয়োজনে শতকণ্ঠে কালজয়ী ভাষার গান, ভাষা শহীদদের নিয়ে আলোচনা সভা, গদ্যপাঠ প্রতিযোগিতা, মুকাভিনয়, নৃত্যানুষ্ঠান ও নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে।
দর্শনার্থীরা বলছেন, নতুন প্রজন্মের মাঝে একুশের চেতনা ছড়িয়ে দিতে এ ধরনের আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মেলার অনুষ্ঠানমালা থেকে শিশু-কিশোররা মহান ভাষা আন্দোলন ও ভাষা শহীদের আত্মত্যাগের কথা জানতে পারছে। আগামীতে এ মেলা আরও বেশিদিন ধরে ও বড় পরিসরে যাতে আয়োজন করা হয় সে দাবিও জানিয়েছেন তারা।
বইমেলায় শিশু সন্তানকে নিয়ে এসেছেন মরিয়ম আক্তার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, চাকরিজীবী হওয়ায় ছুটির দিন ছাড়া সন্তানকে নিয়ে বিকেলে কোথাও বের হতে পারি না। গত কয়েকদিন ধরেই মেয়েটা বইমেলায় আসার জন্য বায়না ধরেছে। আজ মেলায় আনতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।
তিনি আরও বলেন, নতুন প্রজন্মকে অমর একুশে সম্পর্কে জানাতে এ ধরনের আয়োজনের প্রয়োজন রয়েছে। মেয়ের জন্য কিছু শিশুতোষ বই কিনলাম। এখন ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সমৃদ্ধ বই খুঁজছি, পেলে কিনবো।
Advertisement
মেলায় আসা দশম শ্রেণির ছাত্র আকিবুর রহমান বললো, আমি তিনদিন মেলায় এসেছি। একুশে পরিষদের আয়োজনে যে অনুষ্ঠানগুলো হচ্ছে সেখানে আমরা ভাষা আন্দোলন ও ভাষা শহীদদের সম্পর্কে জানতে পারছি। এটি জ্ঞানের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য যে আত্মত্যাগ তার মর্ম উপলব্দি করতে শেখাচ্ছে।
মেলায় প্রথমা প্রকাশনের বিক্রয় প্রতিনিধি প্রশান্ত জাগো নিউজকে বলেন, শুরুর দিকে বিক্রি কিছুটা কম ছিল। তবে শেষ দিনে প্রচুর লোকের সমাগম হয়েছে। তাই বিক্রিও বেশ ভালো হচ্ছে।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারী বলেন, নতুন প্রজন্মকে উজ্জ্বীবিত করতে আমাদের এ প্রচেষ্টা। মহান একুশের চেতনা ছড়িয়ে দিতে নিরলস কাজ করছে আমাদের সংগঠন। একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পথে আমাদের দ্বিধাহীন অভিযাত্রা অনন্তকাল ধরে চলবে।
মশিউর রহমান/এএইচ/জেআইএম