দেশের সব আদালতে বাংলা ভাষা ব্যবহারের জন্য মৌলিক আইনসমূহের নির্ভরযোগ্য বাংলা পাঠ প্রকাশ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে বিষয়টির শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী মো. শিশির মনির জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) থাকবে।
Advertisement
এর আগে, দেশের সর্বাধিক প্রচলিত ও মৌলিক আইনগুলো ইংরেজি থেকে বাংলা ভাষায় রূপান্তর করে নির্ভরযোগ্য পাঠ (অথেনটিক টেক্সট) সর্বসাধারণের পাঠ-উপযোগী করার উদ্যোগ নিতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, বাংলা একাডেমি, আইন কমিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন অনুষদ ও বাংলা বিভাগের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়।
একই সঙ্গে দেশের সব আদালতে বাংলা ভাষা ব্যবহারের জন্য মৌলিক আইনসমূহের নির্ভরযোগ্য বাংলা পাঠ প্রকাশ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
চার সপ্তাহের মধ্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালককে (ডিজি) এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
Advertisement
আরও পড়ুন>> প্রচলিত আইন বাংলা ভাষায় রূপান্তরে ১০ আইনজীবীর লিগ্যাল নোটিশ
সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর করা এক রিটের শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ১৪ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
দেশের প্রচলিত আইন বাংলায় রূপান্তর করার বিষয়ে উদ্যোগ নিতে ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান ১০ আইনজীবী। ওইদিন ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালককে (ডিজি) বিবাদী করা হয়।
নোটিশ হাতে পাওয়ার পর সাতদিনের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিল। অন্যথায় আইনি প্রতিকার চাওয়া হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
লিগ্যাল নোটিশ পাঠনোর পরও নির্ধারিত সময়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ১০ আইনজীবীর পক্ষে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
ওই রিটের ওপর টানা দুদিন শুনানি শেষে কমিটি গঠন ও রুল জারিসহ এ আদেশ দেন আদালত।
এফএইচ/ইএ/এএসএম