বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে ভারতে দায়ের করা মামলার শুনানি আবারও পিছিয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে ফের আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার নগর দায়রা আদালত।
Advertisement
এর আগে, গত শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মামলাটি কলকাতা নগর দায়রা আদালতে উঠলে ২০ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। তবে মঙ্গলবার কলকাতা নগর দায়রা আদালতের স্পেশাল কোর্ট-৩ বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসের বদলে মামলাটি ওঠে বিশেষ সিবিআই কোর্ট-১ বিচারক প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে।
এদিন স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা নাগাদ অভিযুক্তদের আদালতে আনা হয়। দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে তাদের বিচারক প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ে এজলাসে তোলা হয়। এরপর উভয়পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে বিচারক মামলার পরবর্তী হাজিরার দিন ধার্য করেন।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
এই মামলায় নতুন করে প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি, আরেক অভিযুক্ত আমানা সুলতানের শারীরিক অবস্থার মেডিকেল রিপোর্ট চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া, কলকাতার বৈদিক ভিলেজে পি কে হালদারের যে বাসভবনটি রয়েছে, সেটি পুনরুদ্ধার করে সেখানে তার অসুস্থ মা লীলাবতী হালদারকে রাখার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। এসব বিষয়ে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শুনানি হতে পারে।
এদিন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পক্ষের আইনজীবী অরজিৎ চক্রবর্তী বলেন, অভিযুক্তদের পক্ষে দুটি পিটিশন করা হয়েছিল। আজ সেগুলোর শুনানি ছিল। কিন্তু ওই শুনানির ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন জানানো হয়। তাতে আদালত অনুমতি দিয়েছেন। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি হবে।
আগামী দিনগুলোতে আইনি দিক থেকে এই মামলায় কী হতে চলেছে সেই প্রশ্নের উত্তরে ইডির আইনজীবী বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণ এখনো শুরু হয়নি। আগে ট্রায়াল শুরু হোক। বাংলাদেশে যে সাজা হয়েছে সেই রায়ের প্রতিলিপি আদালতের কাছে এসে পৌঁছায়নি। আমরা যেটুকু খবর পেয়েছি, তাতে সাজা ঘোষণা হয়েছে, কিন্তু রায় প্রদান এখনো সম্পন্ন হয়নি। সেই রায়ের প্রতিলিপি না আসা পর্যন্ত এখানে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
পি কে হালদার সহ বাকি অভিযুক্তদের বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অরজিৎ চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে খুব দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া বলা উচিত নয় এবং বলার সময়ও এটি নয়।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ-ভিত্তিক গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারকে গ্রেফতার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারসহ বাকি অভিযুক্তদের।
গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। ভারতের ‘অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২’ এবং দুর্নীতি দমন আইন-১৯৮৮ মামলায় ওই ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়।
বর্তমানে অভিযুক্ত পি কে হালদার সহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে, একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।
ডিডি/কেএএ/