মিশরের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস সুয়েজ খাল। কিন্তু চলতি বছর লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হুথি বিদ্রোহীদের আক্রমণের কারণে সুয়েজ কর্তৃপক্ষের আয়ে ভয়াবহ ধস নেমেছে। আগের বছরগুলোর তুলনায় ২০২৪ সালে সুয়েজ খালের আয় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন মিশরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি।
Advertisement
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগর দিয়ে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা।
তাদের হামলার কারণে বেশ কয়েকটি বড় শিপিং কোম্পানি লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল স্থগিত করেছে। এসব জাহাজ এখন আফ্রিকা ঘুরে কয়েক হাজার মাইল পথ অতিরিক্ত পাড়ি দিয়ে এশিয়া থেকে ইউরোপ-আমেরিকায় যাতায়াত করছে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
এর ফলে পণ্য পরিবহনের খরচ যেমন বেড়ে গেছে, তেমনি সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল কমে যাওয়ায় বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে মিশর।
গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) তেল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এক সভায় মিশরীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, দেখুন, গাজার সঙ্গে আমাদের সীমান্তে কী ঘটছে... যে সুয়েজ খাল থেকে মিশর প্রতি বছর প্রায় হাজার কোটি ডলার আয় করতো, সেই রাজস্ব এখন ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গেছে। অথচ আমাদের কোম্পানি ও অংশীদারদের ঠিকই অর্থ দিতে হচ্ছে।
জাতিসংঘ গত জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে জানিয়েছিল, আগের দুই মাসে সুয়েজ খাল দিয়ে চলাচলকারী জাহাজের সংখ্যা ৪২ শতাংশ কমেছে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
জাতিসংঘের কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) তথ্যমতে, আগের বছরের তুলনায় সুয়েজ খাল দিয়ে সাপ্তাহিক কনটেইনার জাহাজ চলাচল কমেছে ৬৭ শতাংশ, ট্যাংকারের ট্রানজিট ১৮ শতাংশ, শস্য ও কয়লা বহনকারী বাল্ক কার্গো জাহাজের ট্রানজিট কমেছে ছয় শতাংশ এবং গ্যাস পরিবহন কার্যত স্থবিরই হয়ে পড়েছে।
লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরকে সংযুক্ত করেছে ১৮৬৯ সালে চালু হওয়া সুয়েজ খাল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই খাল থেকে মিশরের রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৬০ কোটি মার্কিন ডলার।
সূত্র: এএফপি, এনডিটিভিকেএএ/