জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পরিদর্শনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ৮ সুপারিশ করা হয়েছে।
Advertisement
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিলুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো হলো, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ক্যাম্পাসে সংঘটিত ধর্ষণ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের ন্যূনতম সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন সময়ে যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। জাবি একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই হলের আসন সংখ্যার সমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা হওয়া বাঞ্ছনীয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য দিয়ে বহিরাগতদের প্রবেশের যে ৩টি রাস্তা রয়েছে তা বন্ধ করে বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করতে পারে। ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত আলো ও সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা উচিৎ এবং প্রতিটি স্থান নজরদারীর আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই হলের নিয়ম-কানুন মেনে চলতে বাধ্য করতে হবে। নিয়মিতভাবে শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের হলের সিট অবশ্যই বাতিল করে হলে অবস্থান নিষিদ্ধ করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী ব্যতীত বহিরাগত কেউই হলের কক্ষে প্রবেশ এবং হলে অবস্থান কার্যকরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
সুপারিশসমূহ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করে কমিশনকে লিখিতভাবে অবহিত করার অনুরোধও জানানো হয়।
Advertisement
সুপারিশগুলোর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। আমাদের আইনে যেগুলো মানা সম্ভব, সেগুলো আমরা অবশ্যই মানবো। এক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তারা বহিরাগতদের প্রবেশের বিকল্প রাস্তার সুপারিশ করেছে, আমরা গেট বন্ধ করতে পারি কিন্তু বিকল্প রাস্তা তৈরিতো এতো সহজ নয়। এ ব্যাপারে আমরা ইউজিসির সহযোগিতা চাইবো।
নিপীড়ক শিক্ষকের শাস্তির ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো ছাড় নেই। নিয়মের বাইরে আমি কিছুই করবো না। নিয়মে যা শাস্তি হয়, তাই দেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি কমিশনের ৩ কর্মকর্তার একটি কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে আসে।
এদিকে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের’ ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের অন্যতম একটি দাবি হলো, যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির শাস্তি নিশ্চিত করা।
Advertisement
মাহবুব সরদার/এফএ/এমএস