তারকায় ঠাসা রংপুর রাইডার্স। যে কারণে দলটির একাদশে সুযোগই মেলে না সম্ভাবনাময়ী দেশীয় পেসার আবু হায়দার রনির। বিপিএল দিয়েই যে বোলারের উত্থান। বাঁ-হাতি এই পেসারের লাইন এবং লেন্থ অনেকটাই নিখুঁত। উইকেট টেকিং বোলার হিসেবেও বেশ পরিচিত। দলের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ব্রেক থ্রু এনে দেয়ায় সিদ্ধহস্ত এই পেসার। কুমিল্লার একবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনেও দারুণ অবদান ছিল এই পেসারের।
Advertisement
আবু হায়দার রনি ঠিকানা বদলে এবার খেলছেন রংপুর রাইডার্সে। কিন্তু এই দলটির সাইডলাইনে বসে থাকাটাই যেন নিয়িতি হয়ে দাঁড়িয়েছে তার জন্য। একাদশে সুযোগ পাওয়াটাই দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছিলো। মাঝে একবার, সিলেট পর্বে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু বল করার সুযোগ পান ১ ওভার। ৬ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। এরপর তাকে দিয়ে আর বলই করানো হয়নি।
এরই মধ্যে ঢাকা ঘুরে বিপিএল গেলো চট্টগ্রামে। রংপুরও বিপিএলের কোয়ালিফায়ার প্রায় নিশ্চিত করে ফেললো। যে কারণে আরও একটি সুযোগ পেলেন আবু হায়দার রনি। আজ (সোমবার) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে একাদশে সুযোগ পেলেন এই বাঁ-হাতি পেসার।
সুযোগ যখন পেলেনই, তখন তা হেলায় হারাতে চাইলেন না। রীতিমত রেকর্ডই গড়ে ফেললেন তিনি। বিপিএলের এবারের আসরের সবচেয়ে সেরা বোলিং ফিগারটি উপহার দিলেন আবু হায়দার রনি। ৪ ওভার বল করে ১২ রান দিয়ে নিলেন ৫ উইকেট।
Advertisement
এবারের বিপিএলে আবু হায়দার রনির আগে সেরা বোলিং ফিগার ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পাকিস্তানি পেসার আমের জামালের। ২৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এবারের আসরে ৫ উইকেট নেয়ার ঘটনা রয়েছে আর মাত্র একবার। রংপুর রাইডার্সেরই দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনার ইমরান তাহিরের। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ২৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
দুই বিদেশি ক্রিকেটারের কৃতিত্বকে ম্লান করে দিয়ে সেরা বোলিং করলেন রংপুরের দেশি বোলার আবু হায়দার রনি। বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে এটা চতুর্থ সেরা বোলিং। প্রথম তিন সেরা বোলিংই তিন পাকিস্তানি বোলারের।
সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড ধরে রেখেছেন মোহাম্মদ আমির। ২০২০ সালে খুলনার হয়ে রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। আরেক পাকিস্তানি মোহাম্মদ সামি ৩.২ ওভার বল করে ৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। ২০১২ সালে রাজশাহীর হয়ে ঢাকার বিপক্ষে। তৃতীয় সেরা বোলিং ফিগার পাকিস্তানি ওয়াহাব রিয়াজের। ২০১৯ সালে ঢাকা প্লাটুনের হয়ে রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে।
আবু হায়দার রনি চতুর্থ বোলার হিসেবে তিন পাকিস্তানি পেসারের পাশে নাম লিখলেন, ১২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে। বোলিংয়ে ১৩তম ওভারে এসেই বাজিমাত করেন রনি। কাইল মায়ার্স, মুশফিকুর রহিম এবং সৌম্য সরকারকে এক ওভারেই সাজঘরে ফিরিয়ে দেন তিনি। ফরচুন বরিশালের ইনিংসের কোমর ভেঙে দেন ওই এক ওভারেই। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মেহেদী হাসান মিরাজের উইকেটও নেন তিনি। প্রথম তিন ওভারে ৬ রান দিলেও শেষ ওভারে আরও ৬ রান দিলেন রনি। না হয়, তার ইকনোমি রেটটা আরও কমে যেতে পারতো।
Advertisement
আইএইচএস/