নানা নাটকীয়তার পর গত শুক্রবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বিরোধী দলের আসনে বসার ঘোষণা দিয়েছিল পিটিআই। কিন্তু দু’দিন যেতে না যেতেই ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে ইমরান খানের দলে। পিটিআই বলছে, এখনো সরকার গঠনের আশা ছাড়েনি তারা। কেন্দ্র, পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় সরকার গড়তে নতুন সঙ্গী খুঁজে পেয়েছে দলটি।
Advertisement
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে জানা যায়, পিটিআই’র সম্ভাব্য নতুন অংশীদারের নাম সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল (এসআইসি)।
খাইবার পাখতুনখোয়া বিধানসভায় পিটিআই-পার্লামেন্টারিয়ানসের সঙ্গে ইমরানের দলের আলোচনা অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খট্টক ও মাহমুদ খানসহ পিটিআই-পির বেশ কয়েকজন নেতাকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে পিটিআই। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
এরপরও, গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছে পিটিআই। দলীয় নেতা ওমর আইয়ুবকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীও করেছে তারা।
পিটিআই’র বর্তমান প্রধান ব্যারিস্টার গোহর খান দাবি করেছেন, দলটি জাতীয় পরিষদে ১৮০ আসন, পাঞ্জাবে ১১৫ আসন, সিন্ধে ১৬, খাইবার পাখতুনখোয়ায় (কেপি) ৪২ এবং বেলুচিস্তানে চারটি আসনে জিতেছে। তিনি বলেন, বেলুচিস্তানে আমরা একটি আসন পেয়েছি, তিনটি বাকি রয়েছে। সিন্ধে একটি আসনও পাইনি। পাঞ্জাবে আমাদের প্রায় ৫০টি আসন বাকি রয়েছে।
কেন্দ্রে নতুন অংশীদারপার্লামেন্টে নিজেদের আসন সংখ্যা বাড়ানো এবং নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত আসন দাবি করার জন্য পিটিআই নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জাতীয় ও পাঞ্জাবের বিধানসভায় সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সঙ্গে হাত মেলাবে তারা। রোববার ইসলামাবাদে আলোচনার পর এ কথা জানিয়েছে দলটি।
এসআইসির আগে কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে সরকার গড়তে মজলিস ওয়াহদাত-ই-মুসলিমীনের (এমডব্লিউএম) সঙ্গে হাত মেলানোর কথা জানিয়েছিল পিটিআই। গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মুখপাত্র এই উদ্যোগের ঘোষণাও দিয়েছিলেন।
Advertisement
আরও পড়ুন>>
এমডব্লিউএমের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে ইমরানের পিটিআই ১৭ আসন পাওয়া এমকিউএমের সঙ্গে সমঝোতার দাবি নওয়াজদেরতবে আপাতদৃষ্টিতে, ইমরানের দলের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয় জামায়াত-ই-ইসলামী, যার সঙ্গে খাইবার পাখতুনখোয়ায় অনুরূপ জোট গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিটিআই। জেআই এর প্রতিক্রিয়ায় বলেছিল, তারা পিটিআইর সঙ্গে ‘সীমিত জোটে’ আগ্রহী নয়।
এসআইসির প্রবেশ, এমডব্লিউএমের বিদায়?রোববার পিটিআইর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির আলোচনা করতে ইসলামাবাদে এমডব্লিউএম কার্যালয়ে যান এসআইসি নেতা হাফিজ হামিদ রাজা। স্বাভাবিকভাবেই, ওই বৈঠকে এমডব্লিউএম নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। তবে বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
সূত্রের বরাতে ডন জানিয়েছে, বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে পাঞ্জাব বিধানসভার পাশাপাশি জাতীয় পরিষদের জন্য পিটিআই সমর্থিত নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এসআইসি’তে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করে দুটি স্ট্যাম্প পেপার প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। দলটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর এসব হলফনামা পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে (ইসিপি) জমা দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন>>
শরিফ-জারদারি জোটে এখনো হয়নি ‘দেওয়া-নেওয়া’র সমঝোতা পিপিপি’র যেসব শর্তে আটকে রয়েছে জোট সরকারের আলোচনা ভোট-জোটের জটিল হিসাবে পাকিস্তানের রাজনীতিএমডব্লিউএমের সঙ্গে বিচ্ছেদের জল্পনার মুখে একজন পিটিআই নেতা ডনকে বলেছেন, এমডব্লিউএম নির্বাচনের আগে সংরক্ষিত প্রার্থীদের তালিকা ইসিপিতে জমা দেয়নি, যা একীভূত হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
সূত্র বলেছে, এমডব্লিউএম সংরক্ষিত আসনের জন্য একজনকেও মনোনীত করেনি। ফলে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন বলতে পারে, সংরক্ষিত আসনের প্রার্থীর সংখ্যা কেবল একটি শর্তেই বাড়ানো যাবে, যদি দলটি এরই মধ্যে সংরক্ষিত আসনের প্রার্থীদের তালিকা জমা দিয়ে থাকে তাহলে। অন্য কথায়, তালিকা হালনাগাদ করা যাবে, কিন্তু নতুন তালিকা জমা দেওয়া যাবে না।
এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের ‘প্রতিকূল সিদ্ধান্ত’ এড়াতে এমডব্লিউএমের পরিবর্তে এসআইসির সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিটিআই।
কেএএ/