ঠাকুরগাঁওয়ে বৃদ্ধ দম্পতিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে দরজায় তালা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিটন ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
ভুক্তভোগী দম্পতি আব্দুল হালিম ও জোসনা বেগম জানান, ১০ দিন আগে পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সালন্দর শান্তিনগর এলাকায় স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষিকার বাসা ভাড়া নেন। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও তার লোকজনসহ দম্পতিকে ঘুম থেকে ডেকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে বের করে দেন। বাড়ির মূল ফটকে তালা দিয়ে হুমকি প্রদর্শন করেন।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই দম্পতি বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। সরেজমিনে তাদের বাসার বাইরে এক বেঞ্চে বসে থাকতে দেখা গেছে।
আক্ষেপ করে ওই দম্পতি বলেন, ‘আমরা ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেছি। জায়গা-জমি নিয়ে বাড়ির মালিক ও চেয়ারম্যানের মধ্যে কী সমস্যা আছে সেটা তাদের বিষয়। কিন্তু আমাদের সঙ্গে এমন অন্যায় কেন করা হলো? আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’
Advertisement
পেশায় একটি কোম্পানির ট্রাকচালক বৃদ্ধ আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতেও বাইরে স্ত্রী-সন্তানদের রেখে কাজে যেতে হয়। বাসার হাঁড়ি-পাতিল, আসবাবপত্র, কাপড়চোপড়সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সবই বাড়ির ভেতরে। ভেতরে এখন অন্য অপরিচিত ব্যক্তিরা অবস্থান করছে।’
‘ঘটনাটি দুঃখজনক’ মন্তব্য করে বাড়ি ভাড়া দেওয়া স্কুলশিক্ষিকা কলি ইসলাম বলেন, ‘এটি পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত এলাকা। এখানে স্থানীয় কাউন্সিলর রয়েছেন। ঘটনার দিন আমার স্বামী কাউন্সিলরকে জানিয়েছেন। কিন্তু তারা এখনো সমাধান করতে আসেননি।’
একজন ইউপি চেয়ারম্যান কোন আইনে অন্যের বাড়িতে অনুপ্রবেশ করে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটাতে পারেন, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
স্থানীয় গৃহবধূ আমিনা বেগম বলেন, ‘তালা দেওয়ার পর থেকে তারা আর ঘরে ঢুকতে পারেনি। আমার স্বামী দিনমজুর। সে কলি আপার বাড়িতে বেড়া বানানোর কাজ করছিল। আমাদেরকেও ভয় দেখিয়েছে চেয়ারম্যান।’
Advertisement
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জমিরুল ইসলাম ঘটনা শুনে প্রথমে স্থান শনাক্ত করতে পারছিলেন না। এ প্রতিবেদক ঘটনাটি জানালে স্কুলশিক্ষিকার স্বামী জুয়েল ইসলাম তাকে একবার ফোন করেছিলেন বলে নিশ্চিত করেন। এছাড়া ভাড়াটিয়া আব্দুল হালিমের কাছেও তিনি ঘটনাটি শুনেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান লিটন ইসলাম বলেন, সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। আমি দুদিন সেখানে গিয়েছি। অন্যান্য গণমাধ্যমকর্মীরাও গিয়েছিলেন। এসময় ঘরে তালা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসআই) নির্মল রায় বলেন, ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তানভীর হাসান তানু/এসআর/জিকেএস