জাতীয়

চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে: আনিসুল ইসলাম

চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

Advertisement

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘চাঁদা দে, নইলে গুলি’ এটি একটি গণমাধ্যমের হেডলাইন। যেখানে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে বলা হয়েছে। কিছু ঘটনা তারা লিখেছেন। একটি ঘটনা হচ্ছে, পশ্চিম মেরুল বাড্ডার শিরিন টাওয়ারের গলিতে ফুড কোর্ট নামে একটি ফাস্ট ফুডের দোকানের সামনে দ্রুত বেগে সাত থেকে আটটি মোটরসাইকেল থেমে যায়। মোটরসাইকেল থেকে ১০-১২ জন নেমে ফাস্ট ফুডের দোকানে প্রবেশ করে। এদের মধ্যে এক যুবকের হাতে পিস্তল। দুজনের হাতে ধারালো ছুরি। এরই মধ্যে পিস্তল হাতে থাকা যুবক দোকানের মালিক রায়হানের দিকে এগিয়ে যায়। চেঁচিয়ে বলছে, ‘তোকে বলেছি যে ভাই ফোন দিয়েছিল। ১০ লাখ টাকা চেয়েছে।’

‘কিছুদিন আগে মতিঝিল আওয়ামী লীগের সেক্রেটারিকে গুলি করে মারা হয়। তার স্ত্রী ডলি একজন কাউন্সিলর, তিনি এখন নিয়মিতভাবে টেলিফোন পান হুমকি দিয়ে যাতে মামলা তুলে ফেলা হয়।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে। রাস্তা দিয়ে যখন পরিবহনের ট্রাকগুলো আসে সেখানে চাঁদা দিতে হয়। সেই চাঁদা যোগ হয় দ্রব্যমূল্যে। আপনি একটি বাড়ি করবেন সেখানে বালু কে দেবে, ইট কে সাপ্লাই দেবে, রড কে সাপ্লাই দেবে এগুলোর জন্য দিতে হয় চাঁদা। হয় চাঁদা দিতে হবে, নয়তো তাদের সাপ্লাইয়ের কাজ দিতে হবে। চাঁদাটা ভয়ঙ্কর ব্যাধির আকার ধারণ করেছে।’

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, যে হকাররা খুবই গরিব, কোনোভাবে বিক্রি করে তারা সংসার চালায়। এ গরিব লোকদের থেকে পর্যন্ত চাঁদা নিচ্ছে। চাঁদা নেওয়া হচ্ছে রিকশা থেকে। রিকশার যে স্ট্যান্ড সেখানে তাদের চাঁদা দিতে হচ্ছে। চাঁদা নেওয়া হচ্ছে সিএনজির মালিক, ড্রাইভার তাদের কাছ থেকে। সমাজের প্রত্যেক জায়গায়, বিশ্ববিদ্যালয়েও আমরা অনেক কিছু দেখছি।

তিনি বলেন, আমাদের সংসদে এখন তিনশ সদস্য আছেন। অচিরেই ৩৫০ জনে সেটি উন্নীত হবে। আমার একটি পরামর্শ, আমরা যে ৩৫০ জন আছি, আমরা যদি নিজেদের কাছে প্রতিজ্ঞা করি। আমরা কোনো চাঁদাবাজকে মদত দেবো না, সাহায্য করবো না। তারা যদি এসব কাজ করে তাহলে তাদের প্রতিহত করবো। তাহলে আমি মনে করি হয়তো বাংলাদেশ থেকে চাঁদা নির্মূল করা যাবে না, কিন্তু অনেকখানি আমরা কমাতে পারবো। আমি সংসদে দাঁড়িয়ে আমার যে সহকর্মীরা আছেন, সেই সংসদ সদস্যদের কাছে আমার আবেদন। চলুন আমরা একটা কাজে ঐক্যবদ্ধ হই। এখানে কোনো পয়সা খরচ হবে না। কোনো কিছু লাগবে না। কেবল আমরা প্রতিজ্ঞা করবো এদের মদত দেবো না এবং যেখানে জানবো সেটি প্রতিহত করবো। এ কাজ করলে আমরা মনে করি বাংলাদেশ অনেকখানি বেঁচে যায়।

আইএইচআর/এমএইচআর/জিকেএস

Advertisement