আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে পোস্তগোলা সেতুর (বুড়িগঙ্গা-১) সংস্কারকাজ শুরু হবে, যা চলবে ৮ মার্চ পর্যন্ত। সংস্কারকাজ চলার সময় ঢাকাসহ ২১টি জেলার যাতায়াতের ক্ষেত্রে বাড়তি যানজটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি মাথায় রেখে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগসহ সাতটি সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠক করেছেন।
Advertisement
বাড়তি যানজট মোকাবিলা ও বিকল্প সড়ক নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংস্কারকাজ চলার সময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করা হবে।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের উদ্যোগে।
বৈঠক শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সেতুর সংস্কারকাজ চলার সময় ঢাকা মহানগরীর বাইরে থেকে ভারী যানবাহন কোন পথে আসবে, সম্ভাব্য কোন রুট দিয়ে আসতে পারে যেতে পারে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। এ বিষয়ে একটি গণবিঞ্জপ্তি প্রকাশ হয়েছে। ডিএমপি কীভাবে কাজ করতে পারে ডিএমপিকে অন্য অংশীদাররা কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে তা আলোচনা হয়েছে।
Advertisement
গণবিজ্ঞপ্তিতে সম্ভাব্য রুটগুলো দুই ধরনের ক্যাটাগরিতে করা হয়েছে। একটি ক্যাটাগরি-ভারী যানবাহন আরেকটি হালকা যানবাহন। এছাড়া বিকল্প যেসব রুট আছে সেগুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের প্রধান মুনিবুর রহমান বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে যে রুটগুলো বলা হয়েছে সেগুলোতে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হলে বিকল্প কী রুট রয়েছে সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং পোস্তগোলা ব্রিজের বিকল্প কোন রুট নির্ধারণ করা হয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে এবং যে দুটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে হালকা যানবাহন এবং ভারী যানবাহন সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আজকের বৈঠকে ৭টি সংস্থা অংশগ্রহণ করেছে; যারা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
বাবুবাজারকেন্দ্রিক ভারী যানবাহন চলাচলের রুটের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের কথা বিবেচনায় রেখে গণবিজ্ঞপ্তির রুটগুলো আমরা অনুসরণ করার চেষ্টা করবো। এছাড়া বিকল্প রুটগুলো মাথায় আছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পোস্তগোলা সেতুর (বুড়িগঙ্গা সেতু-১) সংস্কারকাজ ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ চলমান থাকবে। এ অবস্থায় সাময়িকভাবে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় ওই সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের বিকল্প সড়ক ব্যবহারের সাধারণ নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা (বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর), খুলনা বিভাগের ১০ জেলা (খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর) ও বৃহত্তর ফরিদপুর অংশের পাঁচ জেলা (ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী) থেকে দেশের অন্যত্র যানবাহন চলাচলের (গমন ও আগমন) ক্ষেত্রে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নিম্নে ওই সাধারণ নির্দেশিকা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হলো।
১. ঢাকা মহানগরীতে (ডিএমপি) যানবাহন প্রবেশ ও বাইরের ক্ষেত্রে দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া, নবীনগর, আমিনবাজার, গাবতলী এ রুট অনুসরণ করতে বলা হলো। সায়েদাবাদের পরিবর্তে গাবতলীতে যাত্রীবাহী বাস থামবে।
২. ঢাকা বিভাগের অন্য জেলায় (ঢাকা আংশিক), মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল (আংশিক) যানবাহন যাতায়াতের জন্য দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া, নবীনগর, বাইপাইল, চন্দ্রা, ভোগড়া চৌরাস্তা হয়ে এশিয়ান হাইওয়ে ব্যবহার করে যাতায়াত করতে বলা হয়েছে।
৩. রাজশাহী, রংপুর বিভাগমুখী যানবাহনগুলোকে লালনশাহ সেতু (কুষ্টিয়া, পাবনা) ব্যবহার করে যাতায়াত করতে বলা হলো।
৪. ময়মনসিংহ বিভাগ ও টাঙ্গাইল জেলা (আংশিক) যাতায়াতের ক্ষেত্রে লালনশাহ সেতু (কুষ্টিয়া, পাবনা) ও বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে যাতায়াত করতে বলা হলো।
৫. সিলেট বিভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় যানবাহন যাতায়াতের জন্য দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া নবীনগর, বাইপাইল, চন্দ্রা, ভোগড়া চৌরাস্ত হয়ে এশিয়ান হাইওয়ে ব্যবহার করে যাতায়াত কতে বলা হলো।
৬. চট্টগ্রাম বিভাগে যাতায়াতের জন্য পদ্মা সেতু হয়ে শ্রীনগর ওই মুন্সিগঞ্জ ওই মুক্তারপুর সেতু, তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু, মদনপুর, যাতায়াত করতে বলা হলো।
৭. অথবা চট্টগ্রাম বিভাগে যাতায়াতের জন শরীয়তপুর চাঁদপুর ফেরি ব্যবহার করে যাতায়াত করতে বলা হলো।
টিটি/এমআইএইচএস/জেআইএম