রাফা শহরের পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। সেখানকার মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত। তারা খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (ওসিএইচএ) তাদের সর্বশেষ দৈনিক আপডেটে জানিয়েছে, রাফা শহরের লোকজন খাবারের জন্য এমন করুণ পরিস্থিতিতে রয়েছে যে, তারা খাবারের জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছে না। তারা ত্রাণবাহী ট্রাক দেখলে সেগুলো থামাচ্ছে যেন সঙ্গে সঙ্গেই সেখান থেকে খাবার নিয়ে খেতে পারে।
Advertisement
ওসিএইচএ বলছে, দক্ষিণ গাজার ওই জনবহুল শহরে মানবিক সংকট নিয়ে আতঙ্কিত অবস্থার মধ্যেই খাদ্য সংকটের কারণে লোকজন মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং তাদের মধ্যে তীব্র হতাশা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় নাসের হাসপাতালে ‘বিপর্যয়’
সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজায় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে জনাকীর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং সেখানকার লোকজনের জরুরি ভিত্তিতে খাবার প্রয়োজন। তারা ক্ষুধার্ত এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
Advertisement
ওসিএইচএ জানিয়েছে, গাজায় আরও ত্রাণবাহী ট্রাকে খাবার সরবরাহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সেখানকার লোকজনের পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করতে হবে।
শুধুমাত্র রাফাহ এবং কেরেম শালোম (কারেম আবু সালেম) ক্রসিং দিয়ে ত্রাণ সহায়তা গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করতে পারছে। ফলে মধ্য এবং উত্তর গাজায় খাদ্য সরবরাহ করতে হলে প্রথমে রাফাহ দিয়েই প্রবেশ করতে হয়। এদিকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আশদোদ বন্দর দিয়ে গাজা উপত্যকার জন্য পাঠানো আটার একটি বড় চালান আটকে দিয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে। সে সময় হাসপাতালের কর্মী ও রোগীদের গোলাগুলির মুখে জোর করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়।
ইসরায়েল বলছে, তারা খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট ও সীমিত অভিযান পরিচালনা করেছে। তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল যে, হামাস সেখানে জিম্মিদেরকে রেখেছে। তবে এই অভিযোগকে মিথ্যা উল্লেখ করে নাকচ করে দিয়েছে হামাস। ওই হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, সেখানকার অবস্থা খুবই বিপজ্জনক।
Advertisement
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হিজবুল্লাহ
গাজায় চালু রয়েছে এমন হাতেগোনা কয়েকটি হাসপাতালের মধ্যে নাসের হাসপাতাল একটি। এটি গত কয়েকদিন ধরে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে হামাসের যোদ্ধারা হামলা চালানোর পর গাজায় প্রতিরক্ষা অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ২৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
টিটিএন