ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে তারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে কয়েক ডজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে। সে সময় হাসপাতালের কর্মী ও রোগীদের গোলাগুলির মুখে জোর করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
Advertisement
ইসরায়েল বলছে, তারা খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট ও সীমিত অভিযান পরিচালনা করেছে। তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল যে, হামাস সেখানে জিম্মিদেরকে রেখেছে।তবে এই অভিযোগকে মিথ্যা উল্লেখ করে নাকচ করে দিয়েছে হামাস।
আরও পড়ুন>ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হিজবুল্লাহ
হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, সেখানকার অবস্থা বিপর্যয়কর ও খুবই বিপজ্জনক।
Advertisement
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে গত সাতই অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে হামাসের হামলায় অংশ নিয়েছিল এমন একজন রয়েছে। তিনি হামাসের একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক, যিনি একজন জিম্মিকে গাড়ি চালিয়ে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন গ্রুপ এর একজন সদস্য।
তবে হাসপাতালটিতে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলি বিশেষ বাহিনী সেখানে জিম্মিদের থাকার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাননি ও তল্লাশি এখনো অব্যাহত আছে।
প্রকাশিত কিছু ছবিতে দেখা যায়, চিকিৎসাকর্মীরা রোগীদের স্ট্রেচারে করে একটি ধোয়া বা ধুলা ভর্তি করিডর দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
শয্যাশায়ী একজন রোগীকে ছাদ ধসে পড়া একটি করিডর দিয়ে সরিয়ে নিতে দেখা যাচ্ছে।
Advertisement
অন্য আরেকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, মানুষজন আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র একটি দরজার সামনে এনে জড়ো করছে। আর একজন ইংরেজিতে বর্ণনা করছেন, ইসরায়েলি বাহিনী প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
হাসপাতালের ভেতরে থাকা একজন নার্স বলেন, অভিযান চলার সময় হাসপাতালের ভেতরে অনেকগুলো কুকুর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক নাহিদ আবু-তেইমা বলেন, হাসপাতাল ভবনের দৃষ্টিসীমার মধ্যে কয়েক ঘণ্টা ধরে সহিংস গোলা নিক্ষেপ ও মারাত্মক ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে যে রোগীরা ছিলেন তাদেরকে ওয়ার্ডে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, যাদের মধ্যে অনেকের মারাত্মক ধরনের জখম রয়েছে।
তিনি জাতিসংঘ ও রেড ক্রসের কাছে রোগী ও হাসপাতাল কর্মীদেরকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গাজায় চালু রয়েছে এমন হাতেগোনা কয়েকটি হাসপাতালের মধ্যে নাসের হাসপাতাল একটি। এটি গত কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
হাসপাতাল এলাকায় আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার এক দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার এই অভিযান চালালো আইডিএফ।
গত সাতই অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্ত পাড় হয়ে ভেতরে গিয়ে হামাসের যোদ্ধারা হামলা চালানোর পর প্রতিরক্ষা অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ২৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
সূত্র: বিবিসি বাংলা, আল-জাজিরা
এমএসএম