দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সরকারের প্রথম মূল্যস্ফীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, খাদ্য খাতে কিছুটা স্বস্তির ফিরেছে। মাসভিত্তিক খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি কমে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়েছে, গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে যা ছিল ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এছাড়া মাছ, মাংস, চাল, ডাল, ডিম, দুধ ও সবজিতেও মূল্যস্ফীতি কমেছে।
Advertisement
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জানুয়ারির ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ২১ শতাংশ মানুষ
আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে পণ্য পরিবহনে সিন্ডিকেট ভাঙার কড়া নির্দেশনা রয়েছে। একই সঙ্গে সড়কে পণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজির বিষয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে।
Advertisement
বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে খাদ্য ছাড়া অন্য কোনো খাতে মূল্যস্ফীতি কমেনি। অন্য প্রায় সব খাতে আগের দুই মাস (নভেম্বর-ডিসেম্বর) মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও জানুয়ারিতে তা ফের বেড়েছে। এ মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে। খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। নভেম্বরে যে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ ছিল, জানুয়ারিতে তা বেড়ে ৯ দশমিক ৪২ শতাংশে উঠেছে।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ছিল সরকারের। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে আমদানি ব্যাহত হওয়ায় সংকট আরও বেড়েছে। এরই মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য এতদিন মূলত ডলারের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সুদের হার বাড়লে মানুষ সাধারণত ব্যাংকে আমানত রাখতে উৎসাহিত হন।
আরও পড়ুন: ভাতের চাহিদা কমেছে, বেড়েছে সবজি-ফলমূলের
গত কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টাও এবার ব্যর্থ হয়েছে। গত কয়েক মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও বেড়েছে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি।
Advertisement
বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, এবার গ্রামের চেয়ে শহর এলাকায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। জানুয়ারিতে শহর এলাকায় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশে, ডিসেম্বরে যা ছিল ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ। শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ হয়েছে।
জানুয়ারিতে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ। জানুয়ারিতে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৪১ শতাংশে নেমেছে, যা ডিসেম্বরে ছিল ৯ ধশমিক ৬৬ শতাংশ। এসময়ে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ হয়েছে, যা গত ডিসেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৪১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দুই দশকে ডিমের হালি ১২ থেকে ৫৫ টাকা
এমওএস/এমকেআর/জিকেএস