বিশ্বের অন্যতম ও টেকসই মেগাসিটি এই ঢাকা আজ শব্দ ও বায়ুদূষণে অতিষ্ট উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, দেখে মনে হয় এখানে কোনো আইন-কানুন নেই, শহরটির কোনো মা-বাপ নেই। মাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ ডেসিবেলে শব্দ করছে হাইড্রোলিক হর্ণ, নির্মাণকাজ , ড্রিল মেশিন। যার ফলে নাগরিকদের মধ্যে বাড়ছে হার্ট, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রকম রোগ। এ শহরের কি কোনো মা-বাপ নেই? এসময় তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও পুলিশসহ সবাইকে শব্দদূষণ থেকে রাজধানীবাসীকে বাঁচাতে আইনের কঠোর প্রয়োগের আহ্বান জানান।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু সংসদে সভাপতিত্ব করছিলেন।
চুন্নু বলেন, রাজধানীতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনসংখ্যা, সমস্যার অন্ত নেই। যানজট, জলাবদ্ধতা, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণে নাকাল রাজধানীর বাসিন্দারা। দিন দিন শব্দ দূষণের মাত্রা বেড়েই চলছে। ক্রমবর্ধমান যানবাহনের শব্দদূষণ, মাইকের উচ্চশব্দ, এসব কারণে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এ শব্দদূষণের নেই কোন আইন-কানুন। মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দূষণের ফলে মানুষের শ্রবণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের মানুষ এই দূষণের ভুক্তভোগী। শিশু ও বয়স্ক রোগীরাও এই দূষণের অভিঘাত থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। ট্রাফিক পুলিশরা শব্দদূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। গাড়ির হর্ন, নির্মাণকাজ , ড্রিল মেশিন ইত্যাদি এই উচ্চ শব্দদূষণের অন্যতম কারণ।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীতে শব্দ দ্বিগুণ ডেসিবেল হওয়ায় হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস, কানে কম শোনা ইত্যাদি রোগের জটিলতা বাড়ছে। ১২০ ডেসিবেল শব্দ গর্ভবতী নারী শিশু রোগীসহ অনেকের ব্যাপক ক্ষতি করছে, অনেক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য শব্দদূষণের কারণে প্রায় বধির হয়ে গেছে। মোটরসাইকেলে আজকাল হাইড্রোলিক হর্ন বাজায়, সব যানেই হাইড্রোলিক হর্ণ বাজে, মনে হয় দেশে কোনো আইন নেই। এসময় তিনি সেতুমন্ত্রী, পরিবেশমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী এবং ট্রাফিকপুলিশকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।
Advertisement
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, শব্দ ও বায়ুদূষণ বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাতে ৪৫ ডেসিমেল, দিনের বেলায় ৫৫ ডেসিবেল থাকার কথা। হাসপাতাল এলাকায় থাকবে ৪০-৫০ ডেসিবেল। শব্দদূষণ আইন নয়, পরিবেশ আইন ১৯৯৫ সালের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করতে হবে, চালক কখন হর্ন বাজাবে তাও লাইসেন্স দেওয়ার সময় বলা আছে, যার বাস্তবে কোনো মিল নেই।
আইএইচআর/জেএইচ