ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, বিদ্যালয়সমূহে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে নতুন যে বই বিতরণ করা হয়েছে এবং ২০২৩ সালে নতুন যে পাঠ্যক্রম সূচনা করা হয়েছে তা দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনা ও বোধ বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পশ্চিমা চিন্তার প্রভাব সুস্পষ্ট। বিশেষ করে ট্রান্সজেন্ডার, শারীরিক শিক্ষা ও ধর্মবিমুখ বিভিন্ন অধ্যায় এক দিকে যেমন শিক্ষার্থীদের মন মানসিকতার ওপর চরিত্রবিধ্বংসী বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করবে অন্যদিকে তাদের ধর্মহীন করে গড়ে তুলবে।
Advertisement
তিনি বলেন, অচিরেই জাতীয় চিন্তার আলোকে সর্বাধুনিক, মননশীল ও জীবনমুখী পাঠ্যক্রম ও শিক্ষা সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিতর্কিত জাতীয় পাঠ্যক্রম; প্রজন্মের প্রকৃত শিক্ষা ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার হচ্ছে কিছু পাগলের পাগলামির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। অথচ সেই পাগলামির শিক্ষাকেই আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠ্য সিলেবাসে সংযুক্ত করা হয়েছে।’
Advertisement
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী বলেন, ‘যে শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়েছে, তার সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করলে মুসলমানের ঈমানে ঘাটতি তৈরি হবে। আগামীর মা-বাবারা তাদের সন্তানদের শেখানোর জন্য ন্যূনতম যে ধর্মীয় শিক্ষা প্রয়োজন, তাও তারা দিতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে কবি ও দার্শনিক মুসা আল হাফিজ বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ে আত্মপরিচয়ের জায়গায় ধর্মকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ ধর্মপরিচয় একজন ব্যক্তির অন্যতম আত্মপরিচয়। সুলতানী আমলের রাজধানী সোনারগাঁয়ের ইতিহাস থেকে পরিকল্পিতভাবে মুসলিম ইতিহাস ও ঐতিহ্য বাদ দেওয়া হয়েছে। যা ঐতিহাসিকভাবে ও বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল। যারা পাঠ্যপুস্তকে এসব বিষয় সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে আমাদের প্রজন্মকে সাম্রাজ্যবাদের দাস হিসেবে গড়তে চায়, তাদের চিহ্নিত করতে হবে।’
এসময় অন্য বক্তারা বলেন, এ সিলেবাস আমাদের ৯০ ভাগ মুসলমানের মনে আঘাত দিয়েছে। সিলেবাসের এ বিকৃতি হঠাৎ করেই হয়ে যায়নি। বরং ইসলামবিরোধী দীর্ঘমেয়াদী এজেন্ডার একটা তীব্র বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে হাল আমলে এসে। যৌন বিকৃতির এ প্রজেক্ট, কেবল পশ্চিমাদের প্রজেক্ট না। বরং এটা সরাসরি শয়তানের প্রজেক্ট।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শায়খ আবদুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ, চিন্তক আলেম মুফতি লুৎফর রহমান ফরায়েজী, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও গবেষক আলেম মুফতি রেজাউল করীম আবরার, ধর্মীয় আলোচক মাওলানা রিজওয়ান রফিকী, আবদুল্লাহ বিন আবদুর রাজ্জাকসহ অনেকে।
Advertisement
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফী, মাওলানা ইসমাইল সিরাজী আল-মাদানী ও মুফতি আবদুল আজিজ কাসেমী।
আরএএস/এমআইএইচএস/জিকেএস