সিলেটের মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাহেদ আহমেদের মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে মানববন্ধন করেছেন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
Advertisement
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিল বের করেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পরে মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সামনে গিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অশোক বর্মণ অসীমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি আহমদ মাহবুব ফেরদৌসী, সদস্য তাজিম উদ্দিন প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে প্রধান ফটকে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মস্তাবুর রহমান ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো মাহবুবুল হাকিম কর্মকর্তাদের এ দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
Advertisement
বক্তব্যে শিক্ষকরা বলেন, সাহেদের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। অতিদ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে অপরাধীদের যথোপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ডিসেম্বরে সিলেটের আখালিয়ার মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান সাহেদ আহমদ। সেখানে তার নাকে এন্ডোসকপিক সাইনাস অপারেশন করেন নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহ কামাল। এর আগে একইদিন সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. খালেদ মাহমুদ সাহেদের সিস্টের অপারেশন করেন। অপারেশনের পরদিন পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করলে তাকে আলট্রাসনোগ্রাম ও স্লিপেস টেস্ট করানো হয়। পরে হাসপাতালের এমডি অধ্যাপক ডা. আক্তারুজ্জামান সাহেদের প্যানক্রিয়াটাইটিস লিক হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেন।
তবে একই সময় সাইনাস ও সিস্টের অপারেশনের ফলে সাহেদের একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়, প্যানক্রিয়াটাইটিস লিক হয়ে যায় এবং অগ্নাশয়ের জটিল সমস্যায় পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে। অবস্থার আরও অবনতি হলে ৬ ডিসেম্বর তাকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে তার চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাহেদ মারা যান।
এ বিষয়ে মাউন্ট এডোরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ৩০ নভেম্বর সাহেদ নাকের অপারেশন ও অণ্ডকোষে একটি ছোট সিস্ট অপারেশন করার জন্য ভর্তি হন। ১ ডিসেম্বর তার অপারেশন করা হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি অগ্নাশয়ে প্রদাহ রোগে আক্রান্ত হন এবং ঢাকায় চিকিৎসা নেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল অডিট কমিটি তদন্ত করে। তদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী সাহেদ আহমেদের শারীরিক জটিলতার সঙ্গে অপারেশনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
Advertisement
নাঈম আহমদ শুভ/এসআর/জিকেএস