জমি প্রস্তুত করে ক্ষেতে ছিটানো হয় গমের বীজ। তবে এবার সারিবদ্ধ ভাবে গম চাষ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকেরা। এতে প্রতি বিঘায় ৩-৪ মণ বেশি গম উৎপাদনের আশা সংশ্লিষ্টদের। কৃষকেরা বলছেন, সারিবদ্ধ ভাবে বীজ বপন করায় গমের চারা খুব ভালো হয়েছে। তাই দেখতে সুন্দর লাগছে।
Advertisement
জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের মো. মাসুদ রানার জমিতে গিয়ে দেখা যায়, তিন বিঘা জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে বারি-৩২ জাতের গম চাষ করেছেন। এতে যেমন ভলো হয়েছে গমের গাছ। তেমনই দেখতেও ভালো লাগছে। ফলনও ভালো হবে বলে আশা করছেন মাসুদ রানা।
মাসুদ রানা জাগো নিউজকে বলেন, ‘জন্ম থেকেই কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। অন্য বছর আমরা জমিতে ছিটিয়ে গম বপন করতাম। চলতি বছর কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সারিবদ্ধ ভাবে গম চাষ করেছি। এতে গমের গাছ খুবই সুন্দর হয়েছে। আশা করছি এবার গত বছরের তুলনায় ফলন ভালো হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোদিন শুনিনি সারিবদ্ধ করে গম চাষ করা যায়। এবার প্রথম এ পদ্ধতিতে গম চাষ করেছি। এতে গম গাছের আকার খুব ভালো হয়েছে। এ পদ্ধতিতে চাষ করে সেচ দেওয়া খুব সহজ। এমনকি দেখতেও ভালো লাগছে। আগাছা পরিষ্কার করা যাচ্ছে সহজেই।’
Advertisement
আরও পড়ুন• কিশোরগঞ্জে হলুদ ফুলকপিতে লাখ টাকা আয়• সীতাকুণ্ডে বিটরুটের প্রথম চাষেই সফল ২ কৃষক
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর আমার এই জমিতে ১৯ মণ গম উৎপাদন হয়েছিল। এবার সারিবদ্ধ ভাবে চাষ করায় আশা করছি ২১-২২ মণ গম উৎপাদন হবে।’
একই এলাকার হাবিবুর রহমানও এবার সারিবদ্ধ ভাবে গম চাষ করেছেন। তিনি জানান, গমের জমিতে আগাছা পরিষ্কার করার সময় কিছু গমের চারা ভেঙে যায়। কিন্তু এবার সারিবদ্ধ করে চাষ করায় গম গাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ পদ্ধতিতে চাষ করা খুবই সহজ। জমি প্রস্তুত করে সরু নালা করে গম বপন করতে হয়।
সারিবদ্ধ গম চাষ দেখতে আসছেন অনেকে। বেশ কয়েকজন কৃষক বলছেন, আগামী বছর থেকে এভাবেই গম চাষ করবেন তারা। আনারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এবার গম চাষ করেছি ২ বিঘা। তবে সারিবদ্ধ ভাবে নয়। শুনলাম মাসুদ রানা সারিবদ্ধ করে গম চাষ করেছেন, তাই দেখতে এসেছি। ইচ্ছা আছে আগামী বছর সারিবদ্ধ ভাবে গম চাষ করবো।’
Advertisement
আরও পড়ুন• মিরসরাইয়ে স্কোয়াস চাষে সফল কৃষক মুসলিম• ফেনীতে সরিষার চাষ বেড়েছে দ্বিগুণ
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এখানকার চাষিরা জমিতে ছিটিয়ে গম চাষ করেন। আমি তাদের পরামর্শ দিয়েছি সারিবদ্ধ ভাবে গম চাষ করার। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে ফলন ভালো হয়। বিঘাপ্রতি অন্তত ২-৩ মণ ফলন বাড়বে। কয়েকটি জমিতে গিয়েছিলাম, চলতি বছর গমের গাছ খুব সুন্দর হয়েছে। আশা করছি ফলনও ভালো হবে।’
তিনি বলেন, ‘ধানের পরই গম দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দানাজাতীয় ফসল। গম আবাদে পানির প্রয়োজন হয় কম। মাটির প্রকারভেদে গম চাষে সাধারণত ২-৩টি সেচের প্রয়োজন হয়। উঁচু ও মাঝারি দোআঁশ মাটি গম চাষের জন্য উপযোগী। জেলায় গত বছর গম চাষ হয়েছিল ২৬ হাজার ৮৬০ হেক্টর। চলতি বছর হয়েছে ২৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে।’
সোহান মাহমুদ/এসইউ/জেআইএম