মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠির চলমান সংঘর্ষে চরম অস্থিরতায় কেটেছে এপারের সীমান্তে বসবাসকারীদের দিন। বিশেষ করে গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়ায় আতংকে সীমান্ত থেকে নিরাপদে আশ্রয় নেন অনেকে। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, তুমব্রু এবং উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বটতলী, রহমতের বিল এবং টেকনাফের উলুবনিয়া সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা অধিকাংশই আতঙ্কে এলাকা ছাড়েন। তবে কয়েকদিন ধরে ওপারে গোলাগুলি কমে আসায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে। ফলে জীবিকার তাগিদে আবারো মাঠে নেমেছেন কৃষকরা।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) উখিয়ার থাইংখালি রহমতের বিলে দেখা গেলো এক দম্পতি খেতে কাজ করছেন, আরেক কৃষক ধানগাছের চারায় সার দিচ্ছেন।
থাইংখালির কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলির ঘটনায় এ এলাকার কৃষকরা ভয়ে চাষ করাতো দূরের কথা ঘরেও থাকতে পারেনি। প্রচণ্ড গুলির শব্দে শিহরে উঠেছি বারবার। কিন্তু সোমবার থেকে তেমন কোনো গুলির শব্দ আমরা পাচ্ছি না। এ অবস্থায় কৃষকরা ধানচাষে মাঠে নেমেছে।
কৃষক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, কয়েকদিন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ার পর সবজি ক্ষেতে নেমেছি। তারপরও আতঙ্ক কাটছে না। আবার কখন জানি নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।
Advertisement
থাইংখালির আরেক কৃষক সৈয়দ হোসাইন বলেন, গোলাগুলির আগে মাঠে ধান রোপণ করেছি। কিন্তু গুলি ও মর্টারশেলের আতঙ্কে ধান দেখতে পারিনি। অযত্নে অনেক চারা নষ্ট হয়েছে।
তিনি বলেন, চাষ করে আমার সংসার চলে। যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করা কঠিন হবে। তারপরও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। সেটিই করছি।
উখিয়ার পালংখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের কারণে সীমান্তের লোকজন নিরাপদে সরে গিয়েছিল। এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ায় লোকজন বাড়ি-ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। যাদের ক্ষেত ও চাষাবাদের জমি রয়েছে তারা কাজে যাচ্ছেন।
একই কথা জানালেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ধুমধুম ইউনিয়নের পরিষদের সদস্য দিল মোহাম্মদ ভূট্টো। তিনি বলেন, মানুষের মনে স্বস্থি ফিরেছে কিন্তু আতঙ্ক কাটেনি। এরইমধ্যে চাষের জমিতে গিয়ে পেয়েছেন তিনটি অবিস্ফোরিত মর্টারশেল।
Advertisement
এফএ/জেআইএম