বিচার বিভাগের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে বক্তব্য দেওয়ায় দুই আইনজীবীকে করা তলবের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে আজ। আদালতে তাদের সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য রয়েছে।
এর আগে বিএনপি ফ্রন্টভুক্ত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির আদালত বর্জনের ডাক দিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে দেওয়া লিখিত চিঠিতে বিচার বিভাগ, নির্বাচন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য তুলে ধরার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহসিন রশিদ ও শাহ আহমেদ বাদলকে তলব করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সকাল ৯টায় তাদের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সশরীরে হাজির হয়ে আদালত অবমাননার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে নোটিশ জারি করেন সর্বোচ্চ আদালত।
Advertisement
গত ৩ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ তাদের ওই দিন আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্বপ্রণোদিত আদেশ দেন।
এর আগে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের কেন্দ্রীয় কমিটি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে ১ থেকে ৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব অধস্তন আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। তাদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবীরাও একই দিন আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট অ্যাডহক কমিটির পক্ষ থেকে ১ থেকে ৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব অধস্তন আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়ে প্রধান বিচারপতি বরাবরে লিখিত চিঠি দেন।
ওই চিঠিতে বলা হয়, দেশে একটি অনির্বাচিত, জবাবদিহিহীন এবং অস্বচ্ছ ফ্যাসিবাদী শাসনের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। ফলে জনগণ প্রজাতন্ত্রের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে। তারা নজিরবিহীন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ তামাশার সংসদে সদস্য নির্বাচন করতে যাচ্ছে।
এর প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হিসেবে আইনজীবীরা ১ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এমন একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে আইনজীবী, জনগণ স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা রাখছে। আশা করছি মানবাধিকার রক্ষাকারী হিসেবে বিচার বিভাগ কার্যকরভাবে ভূমিকা পালন করবে।
Advertisement
চিঠিতে আরও বলা হয়, পুলিশ এবং বিচার বিভাগ উভয়ই সরকারের ফ্যাসিবাদী নিপীড়নের সহায়ক হয়ে উঠেছে। সাধারণ নাগরিকদের প্রাপ্য জামিন আবেদন নামঞ্জুর এবং দ্রুতগতিতে বিচার পরিচালনা করে ন্যায়বিচারকে সমাহিত করছে। এই পরিস্থিতিতে আদালত বর্জন কর্মসূচি চলাকালে মামলা সংশ্লিষ্ট যেসব আইনজীবী শুনানিতে অংশ নিতে অথবা নির্ধারিত তারিখে আদালতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না, সেসব মামলার পরবর্তী কার্যক্রম ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হোক। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের অনুপস্থিতিতে মামলা খারিজ বা বিরূপ আদেশ দেওয়া উচিত হবে না।
এফএইচ/এসএনআর/জিকেএস