সুরা নাবা কোরআনের ৭৮তম সুরা। এর আয়াত সংখ্যা ৪০টি, রুকু ২টি। সুরা নাবা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। দ্বিতীয় আয়াতে বর্ণিত ‘নাবা’ শব্দটি থেকে এ সুরার নাম হয়েছে নাবা। নাবা শব্দের মূল অর্থ সংবাদ, এখানে কেয়ামতের ও আখেরাতের সংবাদ বোঝানো হয়েছে। কেয়ামত ও আখেরাতের সংবাদই এ সুরার মূল আলোচ্য বিষয়।
Advertisement
সুরা নাবার ১৭-৩০ আয়াতে আল্লাহ বলেন,
সুরা নাবা কোরআনের ৭৮তম সুরা। এর আয়াত সংখ্যা ৪০টি, রুকু ২টি। সুরা নাবা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। দ্বিতীয় আয়াতে বর্ণিত ‘নাবা’ শব্দটি থেকে এ সুরার নাম হয়েছে নাবা। নাবা শব্দের মূল অর্থ সংবাদ, এখানে কেয়ামতের ও আখেরাতের সংবাদ বোঝানো হয়েছে। কেয়ামত ও আখেরাতের সংবাদই এ সুরার মূল আলোচ্যবিষয়।
(১৭)إِنَّ يَوْمَ الْفَصْلِ كَانَ مِيقَاتاً
Advertisement
ইন্না ইয়াওমাল-ফাসলি কানা মীকাতা।
নিশ্চয়ই নির্ধারিত আছে বিচার দিবস;
(১৮)
يَوْمَ يُنْفَخُ فِي الصُّورِ فَتَأْتُونَ أَفْوَاجاً
Advertisement
ইয়াওমা ইউনফাখু ফিস-সুরি ফাতাতূনা আফওয়াজা।
সে দিন বাঁশিতে ফুঁক দেওয়া হবে এবং তোমরা দলে দলে আসবে,
(১৯)
وَفُتِحَتِ السَّمَاءُ فَكَانَتْ أَبْوَاباً
ওয়া ফুতিহাতিছ ছামাউ ফাকা-নাত আবওয়াবা।
আকাশ উন্মুক্ত করা হবে, ফলে তা হবে বহু দ্বারবিশিষ্ট।
(২০)
وَسُيِّرَتِ الْجِبَالُ فَكَانَتْ سَرَاباً
ওয়া ছুইয়িরাতিল জিরালু ফাকানাত ছারাবা।
আর পাহাড়গুলো ধসে পড়বে, ফলে তা হবে বালুময়-মরীচিকা।
(২১)
إِنَّ جَهَنَّمَ كَانَتْ مِرْصَاداً
ইন্না জাহান্নামা কানাত মিরসাদা।
নিশ্চয় জাহান্নাম ওত পেতে রয়েছে;
(২২)
لِلطَّاغِينَ مَآباً
লিত্তাগীনা মাআবা।
সীমালংঘনকারীদের প্রত্যাবর্তনস্থল।
(২৩)
لابِثِينَ فِيهَا أَحْقَاباً
লাবিছীনা ফীহা আহকাবা।
সেখানে তারা যুগ যুগ ধরে অবস্থান করবে,
(২৪)
لا يَذُوقُونَ فِيهَا بَرْداً وَلا شَرَاباً
লা ইয়াযূকূনা ফীহা বারদাওঁ ওয়ালা শারাবা।
তারা সেখানে স্বাদ গ্রহণ করবে না শীতলতার, না কোনো পানীয়ের-
(২৫)
إِلَّا حَمِيماً وَغَسَّاقاً
ইল্লা-হামীমাওঁ ওয়া গাছছাকা।
শুধু ফুটন্ত পানি ও পুঁজ ছাড়া;
(২৬)
جَزَاءً وِفَاقاً
জাঝাআওঁ ওয়িফাকা।
এটাই উপযুক্ত প্রতিফল।
(২৭)
إِنَّهُمْ كَانُوا لا يَرْجُونَ حِسَاباً
ইন্নাহুম কানূ লাইয়ারজুনা হিছাবা।
এরা কখনও হিসেবের আশংকা করত না,
(২৮)
وَكَذَّبُوا بِآياتِنَا كِذَّاباً
ওয়া কাযযাবূ বিআয়াতিনা কিযযাবা।
এবং এরা দৃঢ়তার সঙ্গে আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করেছিল।
(২৯)
وَكُلَّ شَيْءٍ أَحْصَيْنَاهُ كِتَاباً
ওয়া কুল্লা শাইয়িন আহসাইনাহু কিতাবা।
সব কিছুই আমি সংরক্ষণ করেছি লিখিতভাবে।
(৩০)
فَذُوقُوا فَلَنْ نَزِيدَكُمْ إِلَّا عَذَاباً
ফাযূকূ ফালান-নাঝীদাকুম ইল্লা আযাবা।
এরপর তোমরা আস্বাদ গ্রহণ কর, আমি তো তোমাদের শাস্তিই শুধু বৃদ্ধি করব।
এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই
১. চূড়ান্ত ফয়সালার দিন-ক্ষণ নির্ধারিত রয়েছে। সেদিন আল্লাহর নির্দেশে ইসরাফিলের (আ.) বাঁশি বেজে উঠবে এবং মানুষ দলে দলে হাশরের মাঠে গিয়ে সমবেত হবে।
২. আখেরাত ও বিচার দিবসকে যারা মিথ্যা মনে করে, নিজেদের কাজের হিসাব দেওয়ার প্রস্তুতি যাদের নেই, তারা সেদিন ভয়াবহ শাস্তির মুখোমুখি হবে।
৩. কফের ও মুমিন নির্বিশেষে সব মানুষের কাজকর্মই লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষিত থাকছে। প্রত্যেককে তার কাজ অনুযায়ী যথাযথ প্রতিদান ও শাস্তি দেওয়া হবে।
৪. আখেরাতের শাস্তি হবে চিরকালীন; কোনো দিন শেষ হবে না।
৫. আখেরাত, হিসাব ও প্রতিদানে বিশ্বাস মুসলমানদের মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস, আখেরাতে অবিশ্বাসী হয়ে কেউ মুমিন হতে পারে না। আখেরাতের বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে অন্তরে ধারণ করা আমাদের কর্তব্য।
ওএফএফ/এমএস