পাকিস্তানের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও জাতীয় বা প্রাদেশিক পরিষদে সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি ইমরান খানের দল পিটিআই, তথা দলটির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাছাড়া, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে না পারায় সংরক্ষিত আসনের সুযোগও হাতছাড়া হতে চলেছে তাদের। সেটি বুঝে অন্য দলের সঙ্গে হাত মেলানো বা মিশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিটিআই।
Advertisement
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গোহর খান এ তথ্য জানিয়েছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের সঙ্গে আলাপকালে পিটিআই নেতা বলেছেন, তারা এই বিষয়ের বিকল্পগুলো বিশ্লেষণ করে দেখছেন। তবে সম্ভাব্য জোটের জন্য দলটি অবশ্যই পিএমএল-এন বা পিপিপির সঙ্গে যোগাযোগ করবে না।
আরও পড়ুন>> ভোট-জোটের জটিল হিসাবে পাকিস্তানের রাজনীতি
তিনি বলেন, আমরা তাদের উভয়ের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। তাদের কারও সঙ্গে সরকার গঠন বা একসঙ্গে সরকার গড়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না। [তাদের নিয়ে] সরকার করার চেয়ে বিরোধী দলে বসা ভালো। কিন্তু আমরা মনে করি, আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।
Advertisement
সরকার গঠন করতে না পারলে পিটিআই একটি ‘শক্তিশালী বিরোধী দল’ গঠন করবে বলে জানান ইমরান খানের আইনজীবী ও বর্তমান দলীয় প্রধান।
আরও পড়ুন>> নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ইমরান সমর্থকদের বিক্ষোভ
জাতীয় বা প্রাদেশিক- যেকোনো পার্লামেন্টেই সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার ক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসনের বিষয়টি পিটিআইর জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের মোট আসন সংখ্যা ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। বাকি ৭০টি সংরক্ষিত আসন, যার মধ্যে ৬০টি নারীদের ও ১০টি অমুসলিমদের জন্য। এবার একটি আসনের নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় মোট ২৬৫ আসনে ভোট হয়। পরে স্থগিত করা হয় আরও একটি আসনের নির্বাচন।
Advertisement
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন সর্বোছ্চ ৯৭ আসনে; পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) জয়ী হয়েছে ৭৬ আসনে; পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪ আসন এবং মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) পেয়েছে ১৭ আসন।
নির্বাচনে বিজয়ী হতে বা সরকার গঠন করতে অন্তত ১৩৪টি আসন প্রয়োজন। এর সঙ্গে সংরক্ষিত আসন যোগ হলে লাগবে ১৬৯ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
কার সঙ্গে হাত মেলাবে পিটিআই?পিটিআই যেহেতু পিএমএল-এন বা পিপিপির সঙ্গে জোট গড়তে রাজি নয়, তার মানে, দলটি নিবন্ধিত অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই হাত মেলাবে।
আরও পড়ুন>> এমডব্লিউএমের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে ইমরানের পিটিআই
ডনের মতে, এর একটি বিকল্প হতে পারে জামায়াত-ই-ইসলামী (জেআই)। খাইবার পাখতুনখোয়া বিধানসভায় দলটির তিনজন সদস্য রয়েছে। ২০১৩ সালে দল দুটি জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠনের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। যদিও, ২০১৮ সালে প্রাদেশিক সরকারের মেয়াদের শেষের দিকে সেই অংশীদারত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।
সেক্ষেত্রে বেশ জোরেশোরেই শোনা যাচ্ছে মজলিস-ই-ওয়াহদাতুল মুসলিমীনের (এমডব্লিউএম) নাম। দলটি বেশ কিছুদিন ধরে পিটিআই শিবিরে রয়েছে। জাতীয় পরিষদে মাত্র একটি আসনে জিতেছে এমডব্লিউএম।
কেএএ/