সামরিক জোট ন্যাটোতে যেসব সদস্য দেশ নির্ধারিত চাঁদা দেবে না, সেসব দেশে হামলা চালাতে রাশিয়াকে উৎসাহ দেবেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
Advertisement
সমাবেশে ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকের বর্ণনা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ন্যাটোর একটি ‘বড় দেশের’ নেতা আমাকে বলেছিলেন, রাশিয়া যদি তার দেশের ওপর হামলা চালায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে কি না।
জবাবে ট্রাম্প ওই নেতাকে বলেছিলেন, আপনি ন্যাটোর জন্য নির্ধারিত অর্থ দেননি। আপনি অপরাধী। আমরা আপনাকে রক্ষা করবো না, বরং রাশিয়াকে এমন দেশের উপর হামলা চালাতে উদ্বুদ্ধ করবো। সদস্য রাষ্ট্রের সাহায্য পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
ন্যাটো জোটের সদস্যদেশগুলো এই জোটের কোনো একটি দেশের ওপর হামলা হলে সবাই একযোগে তা প্রতিহত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই ট্রাম্পের ওই মন্তব্যকে বিস্ময়কর ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
Advertisement
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের বিষয়ে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র অ্যান্ড্রু বেটস বলেন, খুনি একটি শাসকগোষ্ঠীকে আমাদের ঘনিষ্ঠমিত্র দেশগুলোর ওপর আগ্রাসনকে উৎসাহ দেওয়া বিস্ময়কর ও কাণ্ডজ্ঞাহীন। এমন মন্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা, বিশ্বের স্থিতিশীলতা ও দেশের অর্থনীতি বিপদগ্রস্ত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে এ বছরের নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে প্রার্থিতার দৌড়ে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট থাকা সময় থেকেই তিনি ন্যাটো জোটের তীব্র সমালোচনা করে এসেছেন। বার বার জোটটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনার হুমকিও দিয়েছেন।
নিজের শাসনামলে ন্যাটোতে দেওয়া প্রতিরক্ষা তহবিলের পরিমাণও কমিয়েছিলেন ট্রাম্প। তার অভিযোগ ছিল, যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোতে তার জন্য নির্ধারিত অংশের চেয়েও বেশি অর্থ দিচ্ছে। নিয়মানুযায়ী ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোকে তাদের জিডিপি’র দুই শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করতে হয়।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযান’ শুরু করে। এরপর থেকে ন্যাটোতে না থাকা স্বত্বেও ইউক্রেনকে যে পরিমাণ অর্থ সহায়তা দিয়েছে, তাতেও ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন ট্রাম্প।
Advertisement
এবছর যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অধিকাংশ জনমত জরিপে তাকেই এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও যদি ট্রাম্প ক্ষমতায় আসেন, তাহলে ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি উঠিয়ে নিতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
সূত্র: পলিটিকো, দ্য গার্ডিয়ান
এসএএইচ