ফিচার

মরুভূমির উটের খামার রাজধানীতে

জিহাদুল ইসলাম

Advertisement

উটের বয়স মাত্র এক বছর। অথচ দেখতে প্রায় হাতির মতো। মানুষের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ উচ্চতার উটগুলোকে লালন-পালন করা হচ্ছে পরম যত্নে। ২০ থেকে ৪০ লাখ টাকা দামের একেকটি উটের বিশাল খামার করা হয়েছে খোদ রাজধানীতে।

নানা উপকারিতা থাকায় উটের দুধের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। প্রতি লিটার উটের দুধের মূল্য প্রায় ৪০০ টাকা। প্রতিটি উট দিনে খাবার খায় প্রায় ৩০০ টাকার। এই খামারে প্রতি মাসে উটের খাবারের পেছনেই শুধু খরচ হয় ১ লাখ টাকার ও বেশি।

দেশে প্রথমবারের মতো রাজধানীর আরামবাগের দেওয়ানবাগ শরীফে গড়ে উঠা খামারে অন্য গৃহপালিত পশুর মতোই লালন-পালন করা হচ্ছে উট। কোরবানির পশু হিসেবে পরিচিত মরুভুমির উট দেখতে প্রতিনিয়তই আসেন দর্শনার্থীরা।

Advertisement

আরও পড়ুন‘পচা কলার’ দোকানে মাসে বিক্রি লাখ টাকা

খামারের শুরুতে ২০০৪ সালে রাজস্থান থেকে গাবতলির হাটে আসা ১০ টি উট কিনে শুরু করা হয়। এরপর সময়ের ব্যবধানে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৬৫তে। এখন অবশ্য এতো সংখ্যক উট নেই খামারটিতে। গত ১৮ বছর ধরে এই খামারে কাজ করেন সাহার আলী। তিনি জানান উটের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন খামারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

প্রতিদিন দুই বেলা খাবার হিসেবে খড় দেওয়া হয় উটগুলোকে। এছাড়া সকাল ১১ টার পর নির্দিষ্ট পাত্রে পানিতে ভুসি ও খৈল মিশিয়ে একত্রে উটগুলোকে খেতে দেওয়া হয়।

অন্যান্য প্রাণীর মতোই রোগ বালাই হয় উটের। বিশেষ করে জ্বর, গ্যাস্ট্রিক, চর্মরোগ প্রায়ই আক্রমণ করে মরুভূমির আবহাওয়ায় অভ্যস্ত এসব উটকে। এছাড়া পায়ের তালুতে ক্ষুর না থাকায় নানা ধরনের সমস্যায় মাঝে মধ্যেই পা ফুলে উঠে বলে জানান সাহার আলী। দেশের পরিবেশে উট লালন-পালন করা ভালোভাবেই সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তবে বিশেষ পরিচর্যা আর দলবদ্ধভাবে লালন পালন করতে হবে বিশালদেহী প্রাণীকে।

Advertisement

আরও পড়ুনফুটপাতে চা বিক্রি করতেন, এখন কফি শপের মালিক

অপরিচিত কাউকে দেখলে কিছুটা তেড়ে আসে মরুভূমির এই প্রাণী। তবে যারা দীর্ঘদিন পরিচর্যা করছেন তাদের সঙ্গে গড়ে উঠেছে বিশেষ সখ্যতা। এমনকি খামারের প্রতিটি উটের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও গভীর ধারণা রয়েছে এখানকার শ্রমিকদের।

বিশেষ এই খামারটি করেছিলেন সুফি সম্রাট শাহ দেয়ানবাগী। বর্তমানে পাক দেওয়ানবাগ শরিফের দায়িত্বশীলরা খামারটি পরিচালনা করছেন। উটগুলো দেখাশোনাসহ বিভিন্ন কাজে জড়িত রয়েছে প্রায় ২০ জন কর্মচারী। মাসিক নির্দিষ্ট কোনো বেতন না দেওয়া হলেও দেওয়ানবাগ শরিফ থেকে তাদের জীবন যাপনের খরচ ঠিকই চলে আসে।

আরও পড়ুন

. সিদ্ধ ডিম বেচে হয়েছেন স্বাবলম্বী, করেছেন বাড়ি. ফেলে দেওয়া মাছের আঁশ বিক্রি করে স্বাবলম্বী তারা কেএসকে/এমএস