পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় আগে। তবে এখনো শেষ হয়নি ফল ঘোষণা। অন্তত ১০টি আসনের ফলাফল এখনো অপেক্ষমান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সবচেয়ে বেশি আসনে জয় পেয়েছেন ইমরান খানের সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। কিন্তু তারপরও তাদের জন্য সরকার গঠন অনিশ্চিত। কে কীভাবে সরকার গঠন করবে তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।
Advertisement
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের মোট আসন সংখ্যা ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। বাকি ৭০টি সংরক্ষিত আসন, যার মধ্যে ৬০টি নারীদের ও ১০টি অমুসলিমদের জন্য। এবার একটি আসনের নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় মোট ২৬৫ আসনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে দলগুলোকে। নির্বাচনে বিজয়ী হতে অন্তত ১৩৪টি আসন পেতে হবে তাদের।
আরও পড়ুন>> পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে যা বললো যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ইইউ
বাংলাদেশ সময় শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের তথ্য বলছে, ভোট হওয়া ২৬৫ আসনের মধ্যে ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তারা জিতেছেন ৯২ আসনে।
Advertisement
এরপর ৭১টি আসনে জিতেছে রয়েছে নওয়াজ শরিফের মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন)। ৫৪ আসনে জিতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পিপিপি।
তবে জিও নিউজের খবরে বলা হচ্ছে, ইমরানপন্থি স্বতন্ত্ররা জিতেছেন ৯৪ আসনে। পিএমএল-এন পেয়েছে ৭৪ এবং পিপিপি পেয়েছে ৫৪ আসন। ১৭টি আসনে জিতে এমকিউএম-পি রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। এছাড়া, অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন নয়টি আসনে।
আরও পড়ুন>> নির্বাচনের ফল ঘোষণার মধ্যেই ১২ মামলায় জামিন পেলেন ইমরান খান
আবার, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইমরান সমর্থক প্রার্থীরা ৯৬ আসনে, পিএমএল-এন ৭৫ এবং পিপিপি জিতেছে ৫৪ আসনে। এখনো ১০টি আসনের ফলাফল পাওয়া যায়নি।
Advertisement
জোটই ভরসানিয়ম অনুযায়ী কোনো দল যদি এককভাবে সরকার গঠন করতে চায় তাহলে সংরক্ষিত আসন ছাড়াই অন্তত ১৩৪টি আসনে জয় পেতে হবে এবং সংরক্ষিত আসনসহ পেতে হবে ১৬৯টি।
অর্থাৎ, এবারের নির্বাচনে কোনো দলই যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না, তা নিশ্চিত। ফলে সরকার গড়তে জোট গঠন অবধারিত হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন>> ক্ষমতা ভাগাভাগিতে রাজি নওয়াজ ও বিলওয়াল ভুট্টোর দল
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইমরানপন্থিদের সরকার গঠন আটকাতে ক্ষমতা ভাগাভাগিতে রাজি হয়েছে নওয়াজ ও বিলওয়াল ভুট্টোর দল। পিএমএল-এন প্রেসিডেন্ট ও নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ বিলওয়াল ভু্ট্টো ও তার বাবা সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
জানা গেছে, পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের বাসায় পাকিস্তান পিপলস পার্টির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শাহবাজ শরিফ। এসময় সরকার গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
নিয়মের মারপ্যাচে পিটিআইসর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পেয়েও বেশ বিপাকে রয়েছেন ইমরান সমর্থিত প্রার্থীরা। কারণ, দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারায় তারা সংরক্ষিত আসন পাবেন না। ফলে পিটিআই’র পক্ষে সরকার গঠন করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, স্বতন্ত্ররা তিন দিনের মধ্যে যেকোনো দলে যোগ দিয়ে সরকার বা বিরোধী দল গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবেন।
আরও পড়ুন>> পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে গোলকধাঁধা, ইমরান সমর্থিতদের উপায় কী?
এক্ষেত্রে আলোচনায় উঠে এসেছে এমডব্লিউএম নামে একটি দল। দলটি এ পর্যন্ত মাত্র একটি আসনে জিতেছে। তবে বিজয়ী ইমরানপন্থি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এমডব্লিউএমের ছাতার নিচে জড়ো হয়ে সরকার গঠন করতে না পারলেও শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
কেএএ/