দেশজুড়ে

যমুনায় ভাড়ায় চলে মোটরসাইকেল

সিরাজগঞ্জের চৌহালী যমুনা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলে শুকনা মৌসুমে যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন এখন ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে এটিকেই বেছে নিয়েছেন এ অঞ্চলের বাসিন্দারা। আবার অনেকে হেঁটেই পাড়ি দেন ধু ধু বালুচর।

Advertisement

সম্প্রতি উপজেলার হাটাইল, হাঁপানিয়া, ছোল, দত্তকান্দি, মুরাদপুর, ফুলহারা ও বোয়ালকান্দি চরাঞ্চলে এমনই চিত্র চোখে পড়ে।

চর ও নদীর কারণে ভাড়া বেশি হলেও শুকনা মৌসুমে মাইলের পর মাইল মোটরসাইকেলে যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা। এতে একদিকে যেমন সময় বাঁচে, সুবিধাও বেশি।

বঙ্গবন্ধু সেতু হওয়ার আগে যমুনা নদী পারাপারে মাধ্যম ছিল জাহাজ, লঞ্চ ও নৌকা। কিন্তু কালের বিবর্তনে যমুনা তার যৌবন হারিয়ে এখন মৃতপ্রায়। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে একদিকে যেমন বাস্তুহারা করছে চরের মানুষকে, অন্যদিকে শুকনা মৌসুমে যমুনা মরা খালে পরিণত হচ্ছে।

Advertisement

যমুনার দুর্গম চরের হাঁপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা রিপন মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। নৌকা চলাচল বন্ধ। এজন্য শতাধিক যুবক মোটরসাইকেল চালিয়ে প্রতিদিন আয় করেন। চরাঞ্চলে একস্থান থেকে অন্যস্থানে হেঁটে যেতে যেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগে, সেখানে মোটরসাইকেলে ২০-২৫ মিনিটে যাওয়া যায়।’

ছোল গ্রামের মোটরসাইকেলচালক আনিসুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘মোটরসাইকেল চালিয়ে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় হয়। নদীর পাড় থেকে গ্রামের দূরত্ব অনুযায়ী একজন আরোহী ১০০-২০০ টাকা ভাড়া দেন। যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন তারা মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে রাখেন। প্রয়োজন হলেই ফোন দেন।’

মোটরসাইকেল আরোহী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘যাতায়াতে অনেক সুবিধা হয়েছে বিকল্প ভাড়ায় চালিত যানবাহনের জন্য। তবে এটা সারা বছর নয়, প্রায় ছয় মাস নদীর বুকে এসব যানবাহন চলাচল করে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলাচল করে মোটরসাইকেল।’

চরে মোটরসাইকেল চালান সালাম শেখ। তিনি জানান, তার দুই সন্তান রয়েছে। মোটরসাইকেল চালানো তার বর্তমান পেশা। আগে তিনি বালুর ট্রাকে কাজ করেছেন। এখন তিনি প্রতিদিন মোটরসাইকেল চালিয়ে ৮০০ টাকার মতো উপার্জন করেন।

Advertisement

এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক সরকার জাগো নিউজকে বলেন, এ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি আংশিক ও দুটি পুরোটাই চরাঞ্চল। এসব চরাঞ্চলে লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। স্কুল, মাদরাসা, হাসপাতাল, ব্যাংক, বিমা, কমিউনিটি সেন্টার, এনজিওসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মরত লোকজন প্রতিদিন মোটরসাইকেলে করেই চরে যাতায়াত করেন। এসব মানুষের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন শুকনা মৌসুমে মোটরসাইকেল। তবে চরের অনেক মানুষ এখনো হেঁটেই বিশাল চর পাড়ি দেন।

এম এ মালেক/এসআর/এমএস