বিশেষ প্রতিবেদন

মন্ত্রী-এমপিদের কাগজপত্র নেওয়ার কেউ নেই

জাতীয় সংসদে এমপিদের কাছে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কাগজপত্র, বই, ম্যাগাজিন, মন্ত্রণালয়সহ নানান প্রতিষ্ঠান থেকে যাওয়া কাগজপত্র মাসের পর মাস পরে আছে। সেসব দেখা ও পড়ার আগ্রহ নেই এমপিদের। বরং তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তদবিরে ব্যস্ত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাতীয় সংসদের নিচতলার গ্রন্থাগার সংলগ্ন জায়গায় ৩৫০ জন এমপির নামে যাওয়া বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র রাখার জন্য বক্স তৈরি করে দেয়া হয়েছে। সেখানে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিও আছেন। সোলায়মান নামে ওই ব্যক্তি বেশির ভাগ সময়ই থাকেন না। রোববার দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় সোলায়মান ঝিমুচ্ছেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে নিজেই কৈফিয়ত দেন- সংসদীয় কমিটির দায়িত্বে ছিলেন বলে ক্লান্ত। তিনি জানান, কোনো এমপিই ওই সব কাগজ নিতে আগ্রহী নয়। মাঝে মাঝে তাদের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) এসে কোনো কিছু না দেখেই সব ছিড়ে ফেলেন। তার ভাষায়-‘এই সব পিএস অসভ্য। লেখাপড়া জানে না।’সেখানে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি এমপির বক্সেই গত বছরের পাঠানো বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা কার্ড রয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পাঠানো গত বছরের ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডও বেশির ভাগ এমপি মন্ত্রী নিয়ে যাননি। এছাড়াও নির্বাচন কমিশন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের পাঠানো লিফলেট ও গবেষণামূলক বইও পরে রয়েছে। মৌলভী বাজার-৩ এর সাবেক এমপি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী বেশ কয়েক মাস আগে নিহত হলেও তার নামে বক্সটি এখনও চালু রয়েছে। পরে ওই আসনে তার স্ত্রী নির্বাচিত হলেও নাম পরিবর্তনের প্রয়োজন বোধ করেনি জাতীয় সংসদ। এসব কাগজ না নেয়া সম্পর্কে সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী রোববার দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, অনেক এমপি আছেন এসবের ধার ধারেন না। এ কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজ তারা পান না। এছাড়া সংসদের অনেক নির্দেশনামূলক চিঠিও ওই ডেসপার্সের মাধ্যমে পাঠানো হয়। কিন্তু অনেকে দেখেনই না।সংসদের এক গবেষণা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এমপিদের সুযোগ সুবিধার কথা ভেবে সংসদে অনেক কিছুই আছে। কিন্তু তারা এসব ব্যবহার করেন না। বরং বিভিন্ন তদবির নিয়ে সচিবালয়ে ব্যস্ত থাকেন। এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের এমপি বেগম মাহজাবীন মোরশেদ জাগো নিউজকে বলেন, সংসদে আমাদের কাগজপত্র যায় তাতো জানতাম না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বলতে হবে। প্রসঙ্গত, গত সংসদেও সংরক্ষিত আসনের এমপি ছিলেন এই মাহজাবীন মোরশেদ। এইচএস/একে/পিআর

Advertisement