দেশজুড়ে

স্কুলমাঠে মাটির স্তূপ, বছরজুড়ে বন্ধ খেলাধুলা

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নের মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্কুলের ভবন নির্মাণ কাজের জন্য বছর খানেক আগে পিলার নির্মাণের সময় তোলা হয়েছিল মাটি। সেই মাটি স্তূপ করে রাখা হয় স্কুল প্রাঙ্গণে খেলার মাঠে। এর মাঝে বন্ধ হয়ে যায় ভবন নির্মাণ কাজ। তবে সরানো হয়নি সেই মাটি।

Advertisement

এখন এই মাটির স্তূপের কারণে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের খেলাধুলা বন্ধ। কবে এই মাঠটি ফিরবে আগের রূপে তাও অজানা। প্রায় একবছর যাবত এ দশার তৈরি হলেও কারো যেন কোনো বিকার নেই কোমলমতি শিশুদের এই অসুবিধা নিয়ে। প্রায় সাত শতাধিক ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করছে এ দুটি স্কুলে। এরমধ্যে মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে রয়েছে প্রায় সাড়ে চারশো শিক্ষার্থী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার মধুখালী টু বালিয়াকান্দি আঞ্চলিক সড়কের পাশে ১৯৬৬ সালে মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আর মথুরাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৭১ বছর আগে ১৮৫২ সালে। মাঠের পূর্বপাশে উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন। আর পশ্চিম পাশে প্রাইমারি স্কুলের পুরাতন দোতলা ভবনসহ নবনির্মিত আরও একটি একতলা ভবন অবস্থিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর প্রাইমারি স্কুলের নবনির্মিত একতলা ভবনটি উদ্বোধন করেন। সেখানে এখন পুরোদস্তুর পাঠদান চলছে।

বিপরীত দিকে অবস্থিত মথুরাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের স্থান সংকুলান না হওয়ায় স্কুল মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে দেড় বছর আগে শুরু হয় আরও একটি ভবন নির্মাণ কাজ। পিলার নির্মাণের জন্য মাটি খুঁড়ে রাখার পর ৬ মাস কেটে যায় পিলার ঢালাইয়ে। এরপর মাটির নিচে আরসিসি পিলার স্থাপনের পর বালুর বদলে মাটি দিয়েই ভরাট করা হয় গর্তগুলো। এরপর বছরখানেক চলে গেছে। ভবন নির্মাণ কাজ আর এগোয়নি। মাটির উপরে পিলারের উদোম রডে জং ধরেছে। আর গর্ত খুঁড়ে তুলে রাখা অবশিষ্ট বালু সেইভাবেই প্রায় একবছর যাবত পড়ে আছে মাঠের মধ্যে। এর ফলে এখন স্কুল মাঠে ছেলেমেয়েদের খেলাধুলা বন্ধ।

Advertisement

এ ব্যাপারে মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রায় আড়াই বছর আগে ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একতলা ভবন নির্মাণ কাজের টেন্ডার হয়। মধুখালীর সিরাজুল ইসলাম নামে একজন ঠিকাদার কাজটি পান। এরপর বছরখানেক আগে কাজ শুরু হয়। কাজের এক্সটেনশন করানোর জন্য চেষ্টা চালানো হয়। এজন্য পিলারের মাটির নিচের অংশ ভরাটের পর আর কাজ এগোয়নি। সেই থেকে মাটির স্তূপ পড়ে আছে মাঠে। এজন্য আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধানে অনেককে বলেছি। উপজেলা প্রকৌশলীকে বারবার অনুরোধ করেছি বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য।

তবে নতুন ভবনের এক্সটেনশনের অনুমতি পাওয়া গেছে জানিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, শুনেছি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই কাজ আবার শুরু হবে।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, বালুর পরিবর্তে মাটি দিয়ে পিলার ভরাট করায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

Advertisement

তবে এ কথা সঠিক নয় দাবি করে প্রধান শিক্ষক সুকুমার চক্রবর্তী বলেন, এলাকার কারো কারো স্বার্থ থেকে হয়তো একথা বলতে পারে। তবে যেখানে বালু দেওয়ার কথা সেখানে বালুই দিয়েছে। আর মাটির জায়গায় মাটি।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মে. শহিদুল ইসলাম মিয়া চিকিৎসার কাজে বিদেশে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, বিষয়টি জানা নেই। কোনো শিক্ষকও আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। খোঁজখবর নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফএ/জিকেএস