মিয়ানমারের কারেনি বা কায়াহ রাজ্যের একটি স্কুলে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় চার শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও অন্তত ১০ জন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
Advertisement
কারেনি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কো হপোন নাইং ইরাবতীকে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিমানগুলো সোমবার সকালে গ্রামের ওপর দিয়ে উড়তে থাকে। একপর্যায়ে স্কুলটিতে বোমাবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিন শিশু নিহত হয় ও আরও অনেকে আহত হয়।
আরও পড়ুন: বিদ্রোহীদের তোপে বিপাকে জান্তাবাহিনী, হারাচ্ছে একের পর এক ঘাঁটি
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কায়াহ রাজ্যের ডেমোসো শহরের একটি স্কুলে ওই হামলা চালায় জান্তা বাহিনী। ডেমোসোর একজন স্বেচ্ছাসেবক জানিয়েছেন, সোমবার সকাল ১০টার দিকে ডাউসিই গ্রামের ওই স্কুল ভবন লক্ষ্য করে দুটি যুদ্ধবিমান দুটি বোমা নিক্ষেপ করে। হামলায় স্কুলের ৯০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে।
Advertisement
ওই স্বেচ্ছাসেবক আরও বলেন, ওই এলাকায় জান্তা বাহিনী ও সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মধ্যে কোনো সংঘাতের ঘটনা না ঘটলেও ওই হামলা চালানো হয়। ডেমোসো শহরের প্রায় ১০ মাইল পশ্চিমে কারেনি রাজ্যের রাজধানী লোইকাও যাওয়ার রাস্তায় পড়ে ডাউসিই। এই এলাকাটি আংশিকভাবে কারেনি ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের (কেএনডিএফ) নিয়ন্ত্রণে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের হামলায় ৬২ সেনা নিহত, আরও ঘাঁটি দখল
তিনি জানান, স্কুলটিতে শিশু থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা পড়ে। জান্তা বিমান হামলা ও গোলাগুলি থেকে রক্ষা করার জন্য স্কুল কম্পাউন্ডে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র বা বাঙ্কার রয়েছে। কিন্তু হামলাটি হঠাৎ করে হওয়ায় শিশুদের সেখানে নেওয়ার সময় পাওয়া যায়নি।
ইরাবতীর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পর থেকে কারেনি প্রদেশে ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। কারণ এখানকার বাসিন্দারাই মূলত ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছিল।
Advertisement
আরও পড়ুন: বন্দিশিবির থেকে পালানো ৪১ রোহিঙ্গাকে ধরলো মালয়েশিয়া
কারেনি হিউম্যান রাইটস গ্রুপের তথ্যানুযায়ী, জান্তা বাহিনী গত বছর কারেনি প্রদেশে ১৬০টিরও বেশি আর্টিলারি স্ট্রাইক ও ৭৬টি বিমান হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় ১৮০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ১৪০ জন আহত হয়েছে।
অন্যদিকে, অ্যাডভোকেসি গ্রুপ প্রগ্রেসিভ কারেনি পিপল বলছে, এই বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় কারেনির ৪৬টি ধর্মীয় ভবন, ২২টি স্কুল, ১৪টি হাসপাতাল ও অন্তত ২ হাজার ২৮১টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
সূত্র: ইরাবতী
এসএএইচ