দেশজুড়ে

পুলিশের সামনে হামলায় একজন নিহত, দুই এসআই ক্লোজড

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আব্দুল কুদ্দুস (৫০) নামের একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। এরমধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনার হারুন মিয়া (৩৮) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি চান্দহর ইউনিয়নের আটিগ্রাম এলাকার মৃত রতন মিয়ার ছেলে।

Advertisement

পুলিশের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে সিংগাইরের শান্তিপুর (বাঘুলি) তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সালাম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আজিজুলকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়েছে।

নিহত কুদ্দুস সদ্যসমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী (স্বতন্ত্র) জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সংসদ সদস্য দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর সমর্থক। হামলাকারীরা নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের সমর্থক বলে জানা গেছে। নিহতের পরিবার ও স্বজনদের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হয়েছে।

নিহতের বোন জাবেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতেই আমার ভাইকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। পুলিশ ব্যবস্থা নিলে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতো না।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিরাজপুর হাটের সাবেক ইজারাদার বাদশা মিয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল কালামের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের সিরাজপুর এলাকার আটিপাড়া কবরস্থানের পাশে আবুল কালাম, মিলন ও জোবায়েরের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন বাদশা মিয়ার অনুসারী ফারুক, ভুলু, শাহিনুর ও রাজা মিয়াকে মারধর করেন। বিষয়টি জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতেই আবুল কালামের লোকজন পুনরায় তাদের ওপর হামলা চালান।

হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শাহিনুরের বাম পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রক্তাক্ত জখম হন ফারুক ও আব্দুল কুদ্দুসসহ কয়েকজন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে কুদ্দুসের মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে সিংগাইরের শান্তিপুর (বাঘুলি) তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, দুপক্ষের মারামারি কোনোভাবেই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারিনি। আমাদের কথা না শোনায় এমন ঘটনা ঘটেছে।

সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম বলেন, হামলার ঘটনায় ২০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

Advertisement

তবে হামলার সময় পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা ছিল না বলে দাবি করেন তিনি। ওসি বলেন, যেহেতু নিহতের স্বজনরা দুই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, তাই তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বি এম খোরশেদ/এসআর/এএসএম