প্রতিবছর শীতে পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কয়েকটি দীঘি। যার মধ্যে অন্যতম ৩নং ধামইড় ইউনিয়নের মাটিয়ান দীঘি। এবছরও এসেছে হাজারো অতিথি পাখি। ফজরের আযানের আগ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজারো পরিযায়ী পাখির কলরবে মুখরিত থাকে মাটিয়ান গ্রামের চারপাশ।
Advertisement
এবারো পরিযায়ী পাখির আগমনে পুরো দীঘি সেজেছে নতুন সাজে। এসব পাখি দেখার জন্য শহর থেকেও পাখি প্রেমিরা ছুটছেন মাটিয়ান দীঘির পাড়ে।
স্থানীয় জিবিত চন্দ্র রায় বলেন, এসব পাখির মধ্যে ছোট সরালি, বালিহাস,পানকৌড়িই বেশি। শীতের শুরু থেকে অনেক মানুষ আসছেন পরিযায়ী পাখি দেখার জন্য। আবার পাখি শিকারিরাও আসেন বাটুল, তীর ও বন্দুক নিয়ে। আমরা তাদের বাধা দেই, কারণ এসব পাখিরা আমাদের দেশের অতিথি। তাছাড়া আইনেও পাখি শিকার নিষিদ্ধ। তাই কেউ পাখি শিকারের সাহস পায় না।
সরেজমিনে দেখা যায়, শীত প্রধান বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এসব পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমান দর্শনার্থীরা। পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত থাকে পুরো এলাকা। পাখি প্রেমিরা পাখিগুলোকে একনজর দেখার জন্য ছুটে আসেন দূরদূরান্ত থেকে। সন্ধ্যা নামলেই দীঘি থেকে তারা চলে যায় বিভিন্ন জায়গায়। আবার ভোরবেলা ফিরে আসে। সারাদিন জলকেলি আর ডুবসাঁতারে ব্যস্ত থাকে।
Advertisement
শহরের বালুবাড়ী মহল্লা থেকে পাখি দেখতে আসা এবারের এসএসি পরীক্ষার্থী ফারদিন হাসান তূর্য্য জানায়, শুনেছিলাম মাটিয়ান দীঘিতে অনেক অতিথি পাখি আসে। তাই দেখতে এসেছি। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি দেখে মনটা ভরে গেছে। আমি এর আগে এতো পাখির জলকেলি ও একসঙ্গে আকাশে উড়তে দেখিনি।
দীঘির পাশের জমির মালিক ওয়াহেদুল আলম আর্টিস্ট বলেন, আমার জমির পাশে এই দীঘিতে প্রতিবছরের মতো এবছরও হাজারো পাখি এসেছে। আগত এসব পাখির অভয়ারণ্যে যেন কোনো প্রকার সমস্যা না হয়, সেদিকে আমরা খেয়াল রাখি। প্রতিদিন অনেক মানুষ এখানে পাখি দেখতে আসেন। এমন মনোমুগ্ধকর পরিবেশে মাটিয়ান দীঘিতে একবার ঘুরতে আসলে পাখিদের কলকাকলি আর জলকেলিতে মুগ্ধ হবেন যে কেউ।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. মসলেম উদ্দিন জানান, মাটিয়ান দীঘি পাখির জন্য বিখ্যাত। গ্রামটির নাম তেমন কেউ না জানলেও পুরো জেলার মানুষ মাটিয়ান দীঘির নাম জানেন পাখির জন্য। অতিথি পাখিদের আবাসস্থলে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য দীঘির মালিক মোসাদ্দেক হোসেনসহ আমরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। বিদেশ থেকে আসা আমাদের অতিথিদের যেন কেউ শিকার না করতে পারে সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
এফএ/জেআইএম
Advertisement