জাতীয়

বিআরটিতে কোটি টাকা ঘুস লেনদেনের অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান

আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে যাওয়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রতিস্থাপন করতে বিআরটিএতে তিন ধাপে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া যায়। অটোরিকশা প্রতিস্থাপনসহ বিভিন্ন সেবায় ধাপে ধাপে গ্রাহক হয়রানি ও ১১৩ কোটি টাকার ঘুস বাণিজ্যের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Advertisement

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিআরটিএর ঘুস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২৮ জানুয়ারি একই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজধানীর বিআরটিএ’র মিরপুর অফিসে ছদ্মবেশে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে এ অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর কমিশন থেকে এবার অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, দুদকের কাছে বিআরটি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগে বলা হয়, আয়ুষ্কাল শেষে নিজের সিএনজি অটোরিকশা প্রতিস্থাপন করতে বিআরটিএতে তিন ধাপে ঘুস দিতে হয়। প্রথম ধাপে ভাঙতে দিতে হয় কমপক্ষে ৫০ হাজার, এরপর নতুন নিবন্ধন নিতে ২৫ হাজার ও ভাঙা অটোরিকশা ফেরত পেতে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়।

Advertisement

এতে আরও বলা হয়, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫ বছরে ১২ হাজার ৫০০ অটোরিকশা প্রতিস্থাপন ও মেয়াদ বাড়াতে ১১২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ঘুস বাণিজ্য হয়েছে। এর মধ্যে শুধু প্রতিস্থাপন করতেই ঘুস নেওয়া হয়েছে প্রায় ১০৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ খোকনের পক্ষ থেকে দুদকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, রাজধানীতে ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ১৩ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে নিবন্ধন দেয় বিআরটিএ। এসব গাড়ির ইকোনমি লাইফ (আয়ুষ্কাল) ধরা হয় ১৫ বছর। এরপর অটোরিকশাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২০১৮ সাল থেকে এসব গাড়ি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ধাপে ধাপে প্রতিস্থাপন শুরু করে বিআরটিএ। এর জন্য তখন সরকারি ফি ছিল ১২ হাজার ১০০ টাকা। এরই মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ সব অটোরিকশা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এসব অটোরিকশার মালিকদের নতুন করে আবার নিবন্ধন নম্বর দেওয়া হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, এ দালাল চক্র গাড়ি ভাঙা ও নিবন্ধনের জন্য ঘুসের টাকা সংগ্রহ করে পরিষদের ওই নেতাদের হাতে তুলে দিতেন। তারাই বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অংশ লেনদেন করতেন ঘুসের এ টাকা বিআরটিএ কর্মকর্তা, মালিক সমিতির নেতা ও দালালদের মধ্যে ভাগ হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

Advertisement

এসএম/এমআইএইচএস/এমএস