ফিচার

ফুটপাতে চা বিক্রি করতেন, এখন কফি শপের মালিক

জিহাদুল ইসলাম

Advertisement

সারোয়ার মাহমুদ। মাত্র ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ফুটপাতে ছোট্ট বক্সে চা বিক্রি শুরু করেন। এখন তিনি একটি কফি শপের মালিক। সারোয়ারের দোকানে কফি খেতে আসলেই কুশল বিনিময় শেষে ক্রেতাদের আপ্যায়ন করতে ফ্রিতে হাতে তুলে দেন বিস্কুট। এমনকি নিয়মিত আসা পছন্দের ক্রেতাদের বিনামূল্য খেতে দেন তার স্পেশাল চা।

২০১৫ সালে ফুটপাতে চা বিক্রি শুরু করে ধীরে ধীরে ব্যবসার উন্নতি করেছেন সারোয়ার। তবে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হতে তাকে সহায়তা করেছে বলে মনে করেন এই উদ্যোক্তা। শিক্ষা পর্ব শেষে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন সারোয়ার মাহমুদ। কিন্তু চাকরিতে মন বসছিলো না। এরপর চাকরি ছেড়ে ফুটপাতে প্রথমে চায়ের দোকান দেন। যদিও তার এই সিদ্ধান্ত ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারেনি তার পরিবার। তবে অল্প সময়ের মধ্যে নিজের মনোবল দিয়ে পরিবারকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: ইশারায় বিক্রি হয় পলাশের ভেলপুরি

Advertisement

এখন তিনি একটি কফি শপ চালান। ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল ক্রিকেট খেলে লাল-সবুজের পতাকা হাতে বাংলাদেশকে বিশ্বজুড়ে তুলে ধরবেন। তবে সুযোগ হয়নি সারোয়ার মাহমুদের। তবে ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থেকেই দোকানের নাম দিয়েছেন টি-টোয়েন্টি কফি বার। রাজধানীর পান্থপথ এলাকায় প্রধান সড়কের পাশেই অবস্থিত এই কফি বার। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মিলশেক ও কফি বিক্রি করা হয় এই টি-টোয়েন্টি কফি বারে।

সবুজের ছোঁয়ায় নানান গাছে নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে কফি শপটি। সুস্বাদু মিলশেক ও কফি খেতে প্রতিনিয়ত ভিড় করেন কফিপ্রেমীরা। কফি খেতে আসা শিবলি নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘প্রায়ই এখানে কফি খেতে আসি। আজও খেয়েছি, এখনো আগের মতোই এর স্বাদ আছে। এখানে একবার আসলে যে কেউ তার ব্যবহারে মুগ্ধ হবেন। তার কফি আসলে অসাধারণ’।

অন্যদের মতোই আখের চিনি, ফুলক্রিম মিল্ক, কফি ক্রিমারসহ বিভিন্ন উপাদান দিয়ে কফি তৈরি করা হয় এখানে। তবে বাড়তি মেলে হাসিখুশি মুখে সারোয়ার মাহমুদের বিশেষ আপ্যায়ন। তিনি বলেন, ‘আমার এখানে বিশেষ কিছুই নেই। সবার মতই লাল চিনি,ফুলক্রিম মিল্ক, কফি ক্রিমকফি এগুলোই কফিতে দেই। তবে মন থেকে ভালোবাসা দিয়ে বানাই এই কফি’।

আরও পড়ুন: নীলক্ষেতে পুরোনো বইয়ের ঘ্রাণ

Advertisement

নিয়মের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে নিজেকে স্বাধীনভাবে মেলে ধরতে চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেছেন বলে জানান কফি বিক্রেতা সারোয়ার মাহমুদ। ভালো ব্যবহার না দেখালে মাঝেমধ্যেই এখানকার কফি খাওয়ার সুযোগ হারাতে হয়। ছোট্ট দোকান থেকে ব্যবসার পরিধি বড় হলেও গুণগত মান ধরে রাখতে দোকানে কর্মচারীও নিয়োগ দেননি এই উদ্যোক্তা।

ভিন্নধর্মী কফি শপের এই ব্যবসা করে মুক্ত জীবনযাপনে খুশি সারোয়ার মাহমুদ। চাকরির পেছনে না ঘুরে অন্যদেরও উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান তার। তবে ভাগ্য পরিবর্তনে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।

কেএসকে/জেআইএম