জর্ডানে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীর হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় ইরাক ও সিরিয়ায় পাল্টা হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে এই হামলা চালানো হয়।
Advertisement
মার্কিন এই প্রতিশোধমূলক হামলায় ইরাকে মারা গেছেন ১৬ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৩ জন। অন্যদিকে সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে কমপক্ষে ১৮ জন ইরানপন্থি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
এমন হামলা-পাল্টা হামলাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হামলার নিন্দা জানিয়ে ইরান এটিকে কৌশলগত ভুল বলে আখ্যা দিয়েছে। বলা হয়েছে, ইরাক ও সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে সার্বভৌমত্বের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের চার্টারের লঙ্ঘন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন>ইরাকে মার্কিন হামলায় বেসামরিক নাগরিকসহ নিহত ১৬
Advertisement
তাছাড়া হামলার বিষয়ে জবাব চাইতে বাগদাদে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ইরাক সরকার।
এর আগে সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরানের বিভিন্ন অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনার অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, ওইসব স্থাপনায় কয়েকদিন ধরে হামলা চালানো হবে। তবে কবে থেকে হামলা চালানো হবে তা আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে।
তারও আগে যে কোনো হামলার চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার জন্য ইরান প্রস্তুত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন ইরানের আইআরজিসির প্রধান হুসাইন সালামি। কিন্তু সবশেষ মার্কিন হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পক্ষ থেকে কী ধরনের জবাব দেওয়া হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
Advertisement
আরও পড়ুন>সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানপন্থি ১৮ যোদ্ধা নিহত
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, আমাদের জবাব কেবল শুরু। নিজেদের সেনাদের ওপর যে কোনো হামলা প্রতিহতের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে সিরিয়া জানিয়েছে, মার্কিন হামলার জেরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাত বিপজ্জনকভাবে ছড়িয়ে পড়বে।
একই সুরে কথা বলেছেন ইরাকের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে অঞ্চলের পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, তারা ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কুদস বাহিনীসহ ৮৫টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এসব স্থান ইরানের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কুদস ফোর্স ইরান সমর্থিত কোনো আধাসামরিক গোষ্ঠী নয়, এটি সরাসরি ইরানি সেনাবাহিনীর একটি অফিসিয়াল শাখা।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ দেশ এই সংঘাতে জড়িয়েছে। গাজায় হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনী একে অপরকে হত্যা করছে। এতে অন্তত ২০ লাখের মতো ফিলিস্তিনি চরম দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ২৩৮ জনে। আহত হয়েছেন ৬৬ হাজার ৪৫২ জন।
লেবানন সীমান্তেও বড় পরিসরে সংঘাত চলছে। ফিলিস্তিনের সমর্থনে লোহিত সাগরে বাণিজিক জাহাজে হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এতে মিশরসহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে বেশ কিছু দেশ। মূলত বাণিজ্যিক প্রভাব পড়েছে প্রায় বিশ্বজুড়ে। যদি এই সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে তাহলে জ্বালানি তেলের দাম হু হু করে বেড়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমএসএম