দেশজুড়ে

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সকল বাধ্যবাধকতা এবং মানদণ্ড অনুসরণ করেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব সিরাজুল হক খান। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের স্বচ্ছতা এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশের জনগণকে প্রকল্পের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড অবহিতকরণের লক্ষে শনিবার বিকেলে প্রকল্পের সাইট অফিস ঈশ্বরদীর রূপপুরে এক জণাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে ঢাকা হতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ৭৩ জন এবং পাবনা ও ঈশ্বরদীর ১৪ জন সংবাদকর্মী প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন এবং প্রেস ব্রিফিং-এ অংশগ্রহণ করেন। সচিব সিরাজুল হক খান জানান, ১০৬২ একর জমির উপর এই প্রকল্প নির্মাণ হচ্ছে। প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে রাশান ফেডারেশনের নির্ধারিত ঠিকাদার এটমষ্ট্রয় এক্সপোর্ট এর সঙ্গে ইতোমধ্যে ৪টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সচিব সিরাজুল হক খান প্লান্টের মূল্যের সঠিকতা প্রসংগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মিত্র রাশিয়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহকে প্রাধান্য দিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে। সর্বাধুনিক এই প্রকল্পের যে ব্যয় তা আন্তর্জাতক বাজার মূল্যের হিসেবে অনেক কম- তাই বলা যায় এই প্রকল্প অনেকটা গিফট প্রাইজ।  প্রকল্প পরিচালক ড. সৌকত আকবর জানান, ২০১৭ সালের ১ আগস্ট হতে প্লান্ট বসানোর মূল প্রথম কংক্রিট কাজ শুরু হবে। প্রথম ইউনিটের কমিশনিং ২০১৮ সালের এপ্রিলে শুরু হয়ে ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। দ্বিতীয় ইউনিটের কমিশনিং ২০১৯ সালের এপ্রিলে শুরু হবে এবং ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে।তিনি আরো বলেন, ১২০০ প্লাস ১২০০ মোট ২৪০০ মেগাওয়াট নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ প্লান্ট ৫০ বছর ধরে উৎপাদন করার জন্য ফুয়েল এবং ম্যানেজমেন্ট কষ্ট তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার জন্য গড়ে প্রতি ইউনিটের খরচ পড়বে মাত্র ৩.০০ টাকা। যদি কোন দুর্ঘটনা না ঘটে তবে এই প্লান্ট ৮০-৯০ বছর পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে তিনি জানিয়েছেন। আমাদের জায়গার স্বল্পতা এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের কথা মাথায় রাখলে দেশকে দ্রুত উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই বলে ড. সৌকত জানিয়েছেন। ৪৩৪ কোটি এডিপির টাকা ফেরত প্রসংগে নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানির উপদেষ্টা রবীন্দ্র নাথ সরকার জানান, প্রথম পর্যায়ের অনেক কাজ রাশিয়ানদের অর্থেই সম্পাদিত হওয়ায় অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। তাছাড়া ডলারের দাম ৮০ টাকা ধরে মূল্যায়ন করা হলেও বাস্তবে ছিলো ৭৮ টাকা। এজন্য ১৬০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এই টাকা পরবর্তীতে ব্যয় হবে বলে তিনি জানান। এসময় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান আলী জুলকারনাইন, সদস্য (ভৌত বিজ্ঞান) মাহাবুবুল হাসান, মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।  আলাউদ্দিন আহমেদ/এমএএস/আরআইপি

Advertisement