দেশজুড়ে

ফুলের পাপড়িতে তৈরি বঙ্গবন্ধুর চিত্রকর্মে মুগ্ধ দর্শক

ফ্রেমে আঁটা বঙ্গবন্ধুর ছবিটি দেখলে মনে হবে রং-তুলিতে আঁকা সুনিপুণ চিত্রকর্ম। কিন্তু কাছে গেলে বোঝা যাবে গোলাপ ফুলের পাপড়ির সম্মিলনে ফুটে উঠেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। গোলাপ ফুলের পাপড়িতে তৈরি বঙ্গবন্ধুর এমন একটি চিত্রকর্ম দেখা গেছে ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার গদখালির ফুল উৎসবে। পানিসারা ফুল মোড়ে ‘ফুল উৎসব’ প্রাঙ্গণের একটি স্টলে দৃষ্টিনন্দন এমন কারুকার্য দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

Advertisement

যশোর জেলার ঐতিহ্যবাহী পণ্য উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিমিটেডের একটি স্টল ঘুরে বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ ফুলের তৈরি প্রায় ৩০ রকমের পণ্যের সমাহার দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে খেজুর পাতার কড়াই, খেজুর পাতার বালতি, খেজুর পাতার হাড়ি, গোলাপ ফুল দিয়ে তৈরি রোজ সাবান, ফুল দিয়ে তৈরি চুরি, কলম, চিরুনি, মোবাইল ব্যাককাভার, চাবির রিংসহ বিভিন্ন জিনিস।

ওই সমবায় সমিতির সদস্য রাবেয়া খাতুন, খাদিজা খাতুন, জেসমিন নাহার, তহমিনা আক্তার, লাকিয়া খাতুন, খালেদা আক্তারসহ মোট ১৫ জন সদস্য ফুল দিয়ে এমন কারুকাজ করেছেন। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বেডস্) নামের একটি সংস্থা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ অঞ্চলের নারী ফুলচাষিসহ পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে এ সমবায় সমিতি। এ সমিতির নারীরা ফুল দিয়ে নানা আসবাবপত্র এবং পণ্য তৈরি করে তা বিভিন্ন মেলা এবং প্রদর্শনীতে বিক্রি করে নিজেরা সাবলম্বী হচ্ছেন।

Advertisement

সমবায় সমিতির সদস্য রাবেয়া খাতুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবিটি সম্পূর্ণ গোলাপ ফুল দিয়ে তৈরি। ফুল শুকিয়ে এটিকে তৈরি করা হয়েছে। এতে সময় লেগেছে ২-৩ দিন। মেলায় অনেক দর্শনার্থী আসছে, তাদের বেশি নজর কাড়ছে এই বঙ্গবন্ধুর ছবিটি।

আরেক সদস্য খাদিজা খাতুন বলেন, বেডস্ নামে একটি সংস্থা আমাদের প্রশিক্ষণ দেয়। এরপর আমরা গদখালির নারী ফুলচাষিরা একত্রিত হয়ে একটি সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা করি। এরপর থেকেই আমরা বিভিন্ন ফুল দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করি। বাদ দেওয়া অনেক ফুল দিয়েও কারুকাজ করে পণ্য তৈরি করা হয়।

দেলোয়ার হোসেন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ফুল দিয়ে এতো সুন্দর ছবি তৈরি করা যায় এটা না দেখলে বিশ্বাস করার মতো নয়। অনেক সুন্দর হাতের কাজ। এই হাতের কাজই এখানকার নারীদের অনেক উপরে নিয়ে যাবে।

আরেক দর্শনার্থী রেহেনা পারভিন বলেন, প্রথমে ছবিটি দেখে মনে হয়েছে আর্ট করা, পরে শুনলাম এটি ফুলের তৈরি। শুধু ছবি নয়, চিরুনি, কলম, সবই ফুল দিয়ে তৈরি, সত্যি অসাধারণ হাতের কাজ।

Advertisement

বেডস্’এর মাঠ কর্মকর্তা মাহবুল রহমান খান বলেন, আমরা এখানকার ফুলচাষি নারীদের এই ফুলের কারুকাজের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের উদ্দেশ্য তাদেরকে সাবলম্বী করা।

মিলন রহমান/এফএ/এএসএম