জাগো জবস

বাবার পরিশ্রমই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা: রহমত উল্লাহ

বাবার পরিশ্রমই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা: রহমত উল্লাহ

৪৩তম বিসিএসে অ্যাডমিন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ডা. মো. রহমত উল্লাহ। তার শৈশব ও বেড়ে ওঠা মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়ায়। কৃষক পরিবারে বেড়ে ওঠা রহমত উল্লাহ ছোট থেকেই পরিশ্রমী এবং বাবার কৃষিকাজে সহযোগী। উচ্চমাধ্যমিক পেরিয়ে তিনি অনার্সের জন্য ভর্তি হন রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এএসভিএম অনুষদে। অনার্সে ৩.৮৩ (৪.০০ এর মধ্যে) পেয়ে ভালো ফলাফল করেন।

Advertisement

সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে তিনি বিসিএস জয় ও ক্যারিয়ার পরামর্শ নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাগো নিউজের প্রতিনিধি তাসনিম আহমেদ তানিম—

জাগো নিউজ: বিসিএসে ক্যাডার পাওয়ার অনুভূতি কেমন?রহমত উল্লাহ: আসলে এই অনুভূতি প্রকাশ করার মতো ভাষা আমার জানা নেই। ফলাফল প্রকাশের সময় আমি এবং আমার স্ত্রী চরফ্যাশনে প্যারাডাইস জেনারেল হাসপাতালে ছিলাম। আমি নিজে দেখি এবং নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমার স্ত্রীকেও দেখতে বলি। তারপর যখন মাকে ফোন দিলাম; তখন চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল। এটি ছিল আমার অনেক কষ্টের ফসল।

আরও পড়ুন: ইংরেজি ও গণিতে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে: রণজিৎ

Advertisement

জাগো নিউজ: পড়াশোনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল কি?রহমত উল্লাহ: পড়াশোনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল না। আমার বাবা সব সময় আমাকে সাপোর্ট দিতেন। কোন পরীক্ষায় কত নাম্বার পেলাম, খারাপ করলে কেন হলো—সব বিষয়েই খোঁজ-খবর নিতেন তিনি।

জাগো নিউজ: বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?রহমত উল্লাহ: আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার দূরে দাসকান্দি বাজার। বাজারে যাওয়ার পথে একটা বাড়ি পড়তো। বাইরে থেকে বাড়িতে কারা থাকতো দেখা যেতো না। বাজারে যাওয়ার পথে বাবা বলতেন, ‘এই বাড়িতে দুইজন বিসিএস ক্যাডার আছে, অনেক শিক্ষিত মানুষ উনারা।’ তখন থেকেই মনে হতো আমি বিসিএস ক্যাডার হলে আমার বাবা অনেক খুশি হবেন। সেই থেকেই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন শুরু।

জাগো নিউজ: বিসিএস যাত্রার গল্প শুনতে চাই—রহমত উল্লাহ: ছোটবেলা থেকেই ভাবতাম পরিশ্রম করলে আল্লাহ অবশ্যই দেবেন। নিজে পড়তে এবং কাউকে পড়াতে আমার কখনো খারাপ লাগেনি। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব সিরাজ উদ্দৌলা হলে থাকতাম। হল লাইফে আমি প্রত্যেকটা মিনিট কাজে লাগিয়েছি। আমি সব বিষয়ে সমান গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে যে বিষয়টা আমি ভালো বুঝি; সেই বিষয়টা আমি বেশি বেশি পড়তাম। যেন পারা জিনিস ভুল না হয়।

আরও পড়ুন: নিরাপত্তা কর্মী থেকে বিসিএস ক্যাডার মোত্তালিব মিহির

Advertisement

বিসিএস যাত্রায় আমি ৪০, ৪১, ৪৩, ৪৪তম—এ চারটি বিসিএসেই আমার প্রথম পছন্দ ছিল বিসিএস প্রশাসন। টানা ৪টা বিসিএসেই প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষা দিই। ৪৩তম ছিল আমার ৩য় ভাইভা। তার আগে ৪০তমে প্রাণিসম্পদ ক্যাডার, ৪১তমে নন-ক্যাডার পেয়েছিলাম। ৪৩তম বিসিএসে যখন আমি নিজ সাবজেক্টে ইচ্ছাকৃত ফেল করেও বোথ ক্যাডারে উত্তীর্ণ হই; তখনই আশাবাদী ছিলাম। আল্লাহর দয়া থেকে নিরাশ হইনি।

জাগো নিউজ: কারো কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কি?রহমত উল্লাহ: পর্দার আড়ালে আমাকে আমার বাবার পরিশ্রমই সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। এর কাছে কোনো মোটিভেশনাল স্পিচ বা অন্য কোনো কিছু আমাকে অনুপ্রেরণা জোগায় না।

জাগো নিউজ: নতুনদের জন্য বিশেষ কী পরামর্শ দেবেন—রহমত উল্লাহ: নতুনদের জন্য বলবো, ‘Time which is lost, is lost forever.’ সময় নষ্ট করা যাবে না। নিজের পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো একটা সাবজেক্ট দিয়ে শুরু করা উচিত। সবগুলো সাবজেক্ট ভালো করে পড়া শেষ হলে বেশি বেশি মডেল টেস্ট দেওয়া। সময়টা ভাগ করে নিতে হবে যেন প্রথম ৮০ মিনিটেই পুরো প্রশ্ন পড়ার পাশাপাশি পারা প্রশ্নগুলোর উত্তর করা যায়। লিখিত পরীক্ষায়ও নাম্বার অনুযায়ী সময়টা ভাগ করে নেওয়া। যেমন বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে প্রতি ৫ নাম্বারের জন্য ৬ মিনিট পাওয়া যায়। আপনি যতই পারেন না কেন ৬ মিনিটের বশি না লেখা, পারলে ৫ মিনিটে শেষ করা।

এসইউ/এএসএম